Thursday, August 14, 2014

উৎসবে কক্সবাজার

কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায় বিভিন্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে পালন করেণ বাংলা নববর্ষ। চৈত্র সংক্রান্তি থেকে এ উৎসব শুরু হয়ে চলে প্রায় সপ্তাহজুড়ে। তবে এর আকর্ষণীয় পর্ব পানি খেলা শুরু হয় বৈশাখের চতুর্থ দিন থেকে। আর চলে ষষ্ঠ দিন পর্যন্ত। রাখাইন বুদ্ধিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি মং ফ্লা চিং জানালেন, ‘এবারের ওয়াটার ফেস্টিভাল বা পানি খেলা চলবে ৪ বৈশাখ থেকে ৬ বৈশাখ অবধি। ইংরেজি তারিখের হিসেবে ১৭ এপ্রিল থেকে ১৯ এপ্রিল।’ এ উৎসবে পয়লা বৈশাখে অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল রাখাইন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা অষ্টশীল পালনের জন্য মন্দিরে যান। এদিন বুদ্ধ মূর্তিকে চন্দন জলে স্নান করানোর পরে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও স্নান করেন এবং নতুন পোশাক পরিধান করেন। কক্সবাজারে রাখাইন সম্প্রদায়ের এ উৎসবের মূল জায়গা হলো শহরের চাউল বাজার সড়কের টেকপাড়া। বাড়ির আঙ্গিনায় আঙ্গিনায় এখানে চলে ‘পানি খেলা’র আয়োজন। সঙ্গে থাকে রাখাইন সম্প্রদায়ের সব বয়সের নারী-পুুরষের সম্মিলিত নাচ আর গান। মূল উৎসবে রাখাইন যুবকরা বাদ্য অর গানের তালে তালে এসে উপস্থিত হন বিভিন্ন বাড়ির আঙ্গিনায়। সেখানে ফুলে ফুলে সুজ্জিত প্যান্ডেলের ভেতরে পানি নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন রাখাইন তরুণীরা। চলে একে অপরকে পানি ছিটানো। পনিকে প্রবিত্রতার প্রতীক ধরে নিয়ে রাখাইন তরুণ-তরুণীরা পানি ছিটিয়ে নিজেদের শুদ্ধ করে নেন। পুরনো বছরের সব কালিমা আর জীর্ণতাকে ধুয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেন তারা। সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে এ সময়ে সবাই নতুন পোশাক পড়েন। রাখাইনদের সাংগ্রাই উৎসব বৈচিত্র্যে পরিপূর্ন। সব আদিবাসীরাই বর্ষবরণের এ উৎসব পালন করেন বিভিন্ন নামে। কেউ বৈসুক, কেউ আবার সাংগ্রাই আবার কেউ বিজু। গোটা পার্বত্য এলাকায় এ উৎসব বৈসাবি নামেই পরিচিত। বৈসুক, সাংগ্রাই আর বিজু এই তিন নামের আদ্যাক্ষর নিয়েই বৈসাবি শব্দের উৎপত্তি।
কক্সবাজারের সৈকতে
কক্সবাজারে রাখাইনদের এ উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয় মুলত প্রতিদিন বিকেল থেকে। তাই এ ভ্রমণে দিনের প্রথম ভাগটা ঘুরে বেড়াতে পারেন কক্সকবাজার সমুদ্র সৈকত ও এর আশপাশের দর্শনীয় জায়গাগুলিতে। কক্সবাজার এসে এখানকার সমুদ্র সৈকত না দেখলে কেমন হয়। প্রথমেই বেড়াতে পারেন দেশের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকতে। এ সময়ে সমুদ্র একটু উত্তাল বলে সাবধানতার সঙ্গে সাগরে নামবেন। দ্বিতীয় দিন সকাল বেলা চলে যান হিমছড়ি ও ইনানী। কলাতলী থেকে জিপে চড়ে যেতে পারেন এ জায়গা দুটিতে। খুব সকালে গেলে জায়গা দুটি ঘুরে আবার দুপুরের মধ্যেই ফিরতে পারবেন কক্সবাজার শহরে। কক্সবাজার থেকে জিপে যেতে পারবেন এখানে। রিজার্ভ নিলে খরচ পড়বে ১৫০০-২০০০ টাকা। আর লোকাল জিপে গেলে এ জায়গা দুটি ঘুরে আসতে জনপ্রতি খরচ হবে ২০০-২৫০ টাকা। ভ্রমণ যদি তিন দিনের হয় তবে তৃতীয় দিন প্রথমার্ধে ঘুরে দেখতে পারেন কক্সবাজার শহরের দর্শনীয় স্থানগুলো। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাখাইন সম্প্রদায়ের উপসনালয় অগামেধ্যা কেয়াং, বার্মিজ মার্কেট, শহরে জাদির পাহাড়ের প্যাগোডা ইত্যাদি। আর প্রতিদিন দুপুরের পরে উপভোগ করুন রাখাইন সম্প্রদায়ের আকর্ষণীয় ওয়াটার ভেস্টিভাল বা পানি খেলা।

কিভাবে যাবেন
সড়কপথে ও আকাশ পথে সরসরি কক্সবাজার আসা যায়। এ পথে এস আলম, সৌদিয়া, শ্যামলী, ইউনিক ইত্যাদি পরিবহনের নন এসি বাসে ভাড়া ৫০০-৬৫০ টাকা। গ্রীন লাইন, সোহাগ, সৌদিয়া, এস আলম ইত্যাদি পরিবহনের এসি বাসে ভাড়া ৯৫০-১২৫০ টাকা। এছাড়া ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমান, ইউনাইটেড এয়ার ও জিএমজি এয়ারের বিমানে সরাসরি যেতে পারেন কক্সবাজার।
কোথায় থাকবেন
কক্সবাজারে থাকার জন্য এখন প্রচুর হোটেল রয়েছে। ধরণ অনুযায়ী এ সব হোটেলের প্রতি দিনের রুম ভাড়া ৩০০- ৫০০০ টাকা। পাঠকদের সুবিধার জন্য নিচে কয়েকটি হোটেলের ফোন নম্বর দেয়া হলো। কক্সবাজারে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের রয়েছে হোটেল শৈবাল, ফোন- ৬৩২৭৪। মোটেল উপল, ফোন- ৬৪২৫৮। মোটেল প্রবাল, ফোন- ৬৩২১১। মোটেল লাবনী, ফোন- ৬৪৭০৩। পর্যটন করপোরেশনের ঢাকাস্থ হেড অফিস থেকেও এসব হোটেলের বুকিং দেয়া যায়।
যোগাযোগ
৮৩-৮৮, মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা। ফোন- ৯৮৯৯২৮৮-৯১। এছাড়া অন্যান্য হোটেল হলো হোটেল সি গাল, (পাঁচ তারা), ফোন- ৬২৪৮০-৯১, ঢাকা অফিস ৮৩২২৯৭৩-৬। হোটেল সায়মন, ফোন-৬৩২৩৫, ঢাকা অফিস ৮৬১৪৫৬৫। হোটেল সি কুইন, ফোন- ৬৩৭৮৯, ৬৩৮৭৮। হোটেল সাগর গাঁও লি. ফোন- ৬৩৪৪৫, ৬৩৪২৮। সুগন্ধা গেস্ট হাউস, ফোন- ৬২৪৬৬। জিয়া গেস্ট ইন, ফোন- ৬৩৯২৫। হোটেল সি হার্ট, ফোন- ৬২২৯৮। হোটেল ডায়মন্ড প্লেস এন্ড গেস্ট হাউস, ফোন- ৬৩৬৪২। গেস্ট কেয়ার লি. ফোন- ৬৩৯৩০। হোটেল প্যানওয়া লি. ফোন- ৬৪৪৩০। কক্সবাজারের এনডব্লিউডি কোড-০৩৪১।
ট্রাভেল ব্যাগ

কক্সবাজার ভ্রমণে এ সময়ে বৃষ্টির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই এ ভ্রমণে ট্রাভেল ব্যাগটিতে নিম্নের জিনিসগুলি নিতে পারেন। হালকা রঙের কাপড়, সৈকতে হাঁটার উপযোগী স্যান্ডেল, রেইন কোট অথবা ছাতা, রোদ টুপি, রোদ চশমা, টর্চ, ক্যামেরা, মেমোরি কার্ড, মোবাইল ফোনের চার্জার, দরকারি ঔষধ ইত্যাদি।

Wednesday, August 13, 2014

গাজীপুর বেড়ানো

ঢাকা শহরের পার্শ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা গাজীপুর। এ জেলার উত্তরে ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ জেলা, পূর্বে কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা, দক্ষিণে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে ঢাকা ও টাঙ্গাইল জেলা অবস্থিত। এ জেলার বিভিন্ন স্থানে আছে বেশ কিছু বেড়ানোর জায়গা। ঢাকার পাশ্ববর্তী এসব জায়গায় ভ্রমণ নিয়ে  এবারের বেড়ানো।

জাগ্রত চৌরঙ্গী
গাজীপুর শহরের বেশ কিছুটা আগে জয়দেবপুর চৌরাস্তায় রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বপ্রথম স্মারক ভাস্কর্য ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে সংঘটিত প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামে শহীদ হুরমত আলীসহ অন্যান্য শহীদদের স্মরণে ১৯৭১ সালেই নির্মিত হয় হয় এ ভাস্কর্যটি। এর স্থপতি আব্দুর রাজ্জাক। ভাস্কর্যটির উচ্চতা প্রায় একশো ফুট। আর এর দু’পাশে ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১১ নং সেক্টরের ১০৭ জন এবং ৩নং সেক্টরের ১০০ জন শহীদ সৈনিকের নাম খোদাই করা আছে।
ভাওয়াল রাজবাড়ি
গাজীপুর সদরে অবস্থিত প্রাচীন এ রাজবাড়িটি। জমিদার লোক নারায়ণ রায় বাড়িটির নির্মাণ শুরশু করলেও শেষ করেন রাজা কালী নারায়ণ রায়। প্রায় পনের একর জায়গা জুড়ে মূল ভবনটি বিস্তৃত। ভবনটির দক্ষিণ পাশে মূল প্রবেশপথ। মূল প্রবেশপথের পরেই রয়েছে প্রশ্বস্ত একটি বারান্দা এবং এর পরে একটি হল ঘর। ভবনের ওপরের তলায় ওঠার জন্য ছিল শাল কাঠের তৈরি প্রশ্বস্ত সিঁড়ি। ভবনের উত্তর প্রান্তে খোলা জাগায় রয়েছে ‘নাটমণ্ডপ’। রাজবাড়ির সব অনুষ্ঠান হতো এ মঞ্চে। রাজবাড়ির মধ্যে পশ্চিমাংশের দ্বি-তল ভবনের নাম ‘রাজবিলাস’। এ ভবনের নিচে রাজার বিশ্রামাগারের নাম ছিল ‘হাওয়ামহল’। দক্ষিণ দিকে খোলা খিলান যুক্ত উম্মুক্ত কক্ষের নাম ‘পদ্মনাভি’। ভবনের দোতলার মধ্যবর্তী একটি কক্ষ ছিল রাণীমহল নামে পরিচিতি। সুরম্য এ ভবনটিতে ছোট বড় মিলে প্রায় ৩৬০টি কক্ষ আছে। বর্তমানে এটি জেলাপরিষদ কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী
ভাওয়াল রাজবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে মৃতপ্রায় চিলাই নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী। এটি ছিল ভাওয়াল রাজ পরিবার সদস্যদের সবদাহের স্থান। প্রাচীন একটি মন্দির ছাড়াও এখানে একটি সমাধিসৌধ আছে।
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান

গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর থানা জুড়ে অবস্থিত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। পৃথিবীর অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের আদলে ৬৪৭৭ হেক্টর জমিতে ১৯৭৩ সালে এ উদ্যান সরকারি ভাবে গড়ে তোলা হয়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। এছাড়াও নানা রকম গাছ-গাছালিতে পরিপূর্ণ এ উদ্যান। জাতীয় উদ্যানের ভেতরে বেশ কয়েকটি বনভোজন কেন্দ্র, ১৩টি কটেজ ও ৬টি রেস্ট হাউস আছে। উদ্যানে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৬ টাকা। এ ছাড়া পিকনিক স্পট ব্যবহার করতে হলে বন বিভাগের মহাখালী কার্যালয় থেকে আগাম বুকিং দিয়ে আসতে হবে।
সফিপুর আনসার একাডেমি
জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় অবস্থিত আনসার-ভিডিপি একাডেমির বিশাল চত্ত্বর বেড়ানোর জন্য একটি উপযুক্ত যায়গা। অনুমতি সাপেক্ষে বনভোজন করারও ব্যবস্থা আছে এখানে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে গাজীপুর যেতে পারেন রেল ও সড়ক পথে। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী প্রায় সব আন্তঃনগর, কমিউটার, মেইল ট্রেনে চড়ে আসতে পারেন গাজীপুর। এছাড়া ঢাকার কাঁচপুর ও যাত্রাবাড়ী থেকে ট্রান্স সিলভা, অনাবিল, ছালছাবিল পরিবহন, লোহারপুল থেকে রাহবার পরিবহন, মতিঝিল থেকে গাজীপুর পরিবহন, ভাওয়াল পরিবহন, অনিক পরিবহন, সদরঘাট থেকে আজমিরি, স্কাইলাইন পরিবহন, গুলিস্তান থেকে প্রভাতী বনশ্রী পরিবহন ছাড়াও অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বাস সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলাচল করে গাজীপুরে বিভিন রুটে। ভাড়া ৪০-৬০ টাকা।
কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে দিনে গিয়ে দিনেই শেষ করা সম্ভব গাজীপুর ভ্রমণ। তাই এখানে অবস্থান না করলেও চলে। তারপরেও শহরের বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে। এরকম হয়েকটি হোটেল হলো হোটেল আল মদিনা, থানা রোডে হোটেল মডার্ণ, কোনাবাড়িতে হোটেল ড্রীমল্যান্ড ইত্যাদি। এসব হোটেলে দৈনিক ১০০-২৫০ টাকায় থাকার ব্যস্থা আছে।

কিছু তথ্য
গাজীপুর থেকে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে যেতে হলে নিজস্ব পরিবহন না থাকলে জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে লোকাল বাস কিংবা টেম্পু যোগে যাওয়া ভালো। জাতীয় উদ্যানের বনভোজন কেন্দ্র ব্যবহার করতে হলে মহাখালী বন বিভাগের কার্যালয়ে এই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন- ৮৮১৪৭০০। সফিপুর আনসার একাডেমিতে যেতে হলে ৭২১৪৯৫১-৯ এই নম্বরে যোগাযোগ করুন। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের বেশি ভেতরে গেলে সাবধানতা অবলম্বন করুন। একা একা কিংবা দু-তিনজন হলে বেশি ভেতরে না যাওয়াই ভালো।

শ্রীমঙ্গল চা বাগানে

চা বাগানে নতুন বছর বৃষ্টিস্নাত হয়ে এখন নতুন রূপে সেজেছে শ্রীমঙ্গল। অনেক দিনের খরা শেষে বৃষ্টির দেখা পাওয়া গেল। চায়ের বাগানগুলো যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। পাহাড়-টিলায় নাম জানা না-জানা গাছগুলোর ডালপালা চুইয়ে পড়ছে বৃষ্টির বিন্দু। সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে বের হওয়া ঝরনাগুলোর পানি দেখেমনে হয় যেন ঢল নেমেছে। চারদিক থেকে সবুজ-সতেজ জীবনের হাতছানি। সজীবতার এ ডাক ফিরিয়ে দেয় কার সাধ্য? বছরের প্রথম দিনটিতে তো তা উপেক্ষা করতে পারলামই না।
১ বৈশাখ ১৪১৭ বঙ্গাব্দ। একদম ভোরে শ্রীমঙ্গল-শমসেরনগর সড়ক ধরে বেরিয়ে পড়লাম। শ্রীমঙ্গল শহর ছাড়িয়ে কিছু দূর এগোলেই চেখে পড়ে ঠেলাগাড়ির দীর্ঘ লাইন। একদল শ্রমজীবী মানুষ পাহাড়ি রাস্তায় দৌড়াচ্ছে আর ঠেলা ঠেলছে। কারও ঠেলায় আনারস, কারও ঠেলায় লেবু, কাঁঠাল, কলা। তাদের গন্তব্য শ্রীমঙ্গলের নতুন বাজার। ফলের পাইকারি এ বাজারটি সূর্যোদয়ের আগেই শেষ হয়ে যায়।
ডানে-বাঁয়ে চোখ ফিরিয়ে দেখলাম বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে চা গাছে নতুন কুঁড়ি গজিয়েছে। বাতাসে কাঁচা চায়ের মিষ্টি একটা গন্ধ অনুভব করলাম। চা গাছের কচি গাঢ় সবুজ পাতায় বিন্দু বিন্দু বৃষ্টির ফোঁটা জমে আছে। একটু পরেই চা বাগানের ছায়াবৃক্ষের ফাঁকে উঁকি দেবে সূর্য।
দেখতে দেখতে পুবের আকাশ অনেকটাই রাঙা হয়ে এসেছে। তারই খানিকটা আভা এসে পড়েছে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’র ওপর, যেখানে ফোঁটায় ফোঁটায় জমে আছে বৃষ্টির বিন্দু। তার ওপর র্সূযের আলো পড়ে জ্বল জল করছে।
প্রকৃতি আর মানুষের সৃজিত চা বাগানের রূপলাবণ্য দেখতে দেখতে চা গবেষণাকেন্দ্রের (বিটিআরআই) রাস্তায় এসে পৌঁছালাম। চৌরাস্তার পাশেই বিশাল তিন-চারটি গাছের মগডালে পাখিদের কিচির-মিচির। দেখলাম সবুজ ঘুঘুর দল একে অপরের সঙ্গে মিতালি করছে।

ভোরের আলোয় হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম জেমস ফিনলে টি কোম্পানির কাকিয়াছড়া চা বাগানে। বাগানের লাইন (সারিবদ্ধ শ্রমিক বসতি) থেকে ভেসে আসছে শ্রমিক সরদারের হাঁক—‘রেন্ডি দফা দুইয়ে, দোছরা দফা সাতে…’।
হাঁক অনুসরণ করে এগিয়ে গেলাম। তিন-চার দিক থেকে এমন হাঁক বাতাসে ভেসে আসছে। লম্বা লাঠি হাতে প্রতিটি শ্রমিক লাইনে সরদাররা ঘুরে ঘুরে সুর করে হাঁকছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা গেল সারিবদ্ধভাবে চা বাগানের নারী-শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেওয়ার জন্য লাইন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। শত শত নারী-শ্রমিক ছড়িয়ে পড়লেন চা বাগানের চারদিকে—মাঠে মাঠে।
রাস্তার দুই পাশে নারী-শ্রমিকের পাতা তোলার ছন্দময় দৃশ্য দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম কাকিয়াছড়া পেরিয়ে ফুলছড়া চা বাগানে। সবখানেই একই দৃশ্য। চিরায়ত প্রাণের স্পন্দন।
রিকশা নিয়ে চা বাগানে বেড়ানোর মজাই আলাদা। ফুলছড়া চা বাগানের বাজার থেকে রিকশা নিলাম। ভাড়া প্রতি ঘণ্টায় ৬০ টাকা।
দুপুরে সূর্য যখন মাথার ওপরে। কালীঘাট চা বাগানের বিশাল বটগাছের কাছে বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসে খানিকটা বিশ্রাম নিলাম। মুড়ি, পেঁয়াজ আর কাঁচা পাতার এক কাপ চা দিয়ে গলাটা ভিজিয়ে অবসন্ন শরীরটাকে চাঙা করে আবারও পথ ধরলাম।
কালীঘাট পেরিয়ে ডিনস্টন চা বাগান। এ বাগানের বহুল পরিচিত নাম কেজুরিছড়া। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। কেজুরিছড়া চা বাগানে রয়েছে ‘ডিনস্টন সিমেট্রি’। খ্রিষ্টানদের এই কবরস্থানের সঙ্গে এ অঞ্চলে চা বাগানের গোড়াপত্তনের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। তাই চা বাগান কর্তৃপক্ষ এ কবরস্থানটিকে খুবই যত্ন করে রেখেছে।
১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে শ্রীমঙ্গলে চায়ের আবাদ শুরু হয়। সে সময় থেকে ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত যেসব ব্রিটিশ সাহেব-মেম এবং তাঁদের শিশুরা মারা গেছেন, তাঁদের এখানে সমাহিত করা হয়েছে।
সিমেট্রি থেকে যখন ফিরছিলাম তখন পড়ন্ত বিকেল। শ্রমিকেরা মাঠ থেকে ফিরছেন। মাথায় তাঁদের কাঁচা পাতার বোঝা। সারিবদ্ধ এই ফেরা আরও একটা নির্দিষ্ট গন্তব্যে, যেখানে একজন বাবু (করণিক) পাতার ওজন মেপে নামের পাশে লিখে রাখবেন। ওখানে পাতা বুঝিয়ে দিয়ে তবে নারী-শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরবেন।
ফিরতি পথে চা বাগানে সূর্যাস্ত উপভোগ করলাম। আস্তে আস্তে চা বাগানের ছায়াবৃক্ষের ফাঁক দিয়ে সূর্য ডুবছে। একসময় টকটকে লাল সূর্যপিণ্ড দিগন্ত বিস্তৃত সমান্তরাল চা গাছের আড়ালেই যেন হারিয়ে গেল। গাঢ় সবুজের মধ্যে লাল বৃত্ত। আমাদের পতাকাকেই যেন স্মরণ করিয়ে দেয়।
চা বাগানে সবুজের মধ্যে শেষ হলো বাংলা বছরের প্রথম দিনটি। সারা বছর যদি এভাবেই কাটত!
কোথায় থাকবেন কীভাবে থাকবেন

শ্রীমঙ্গলের চা বাগানে বেড়াতে হলে সবচেয়ে ভালো থাকার ব্যবস্থা রয়েছে চা গবেষণা কেন্দ্র ও প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের দুটি রেস্ট হাউস। আর আছে চা বোর্ডের টি রিসোর্ট। এ তিনটিই চা বাগানের মধ্যে। এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল শহরে থাকার ভালো আবাসিক হোটেল রয়েছে। আছে গেস্ট হাউস। ৫০০-৬৫০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়ায় এসব আবাসিক হোটেল, রেস্ট হাউস, গেস্ট হাউস পাওয়া যাবে। তবে মনে রাখবেন, ভ্রমণের অন্তত এক সপ্তাহ আগে থাকার জায়গার ব্যবস্থা করে নিতে হবে। আর আগেই বলেছি, রিকশা নিয়ে চা বাগানে ঘোরার মজাই আলাদা। ৬০ টাকা ঘণ্টা হিসেবে রিকশা ভাড়া পাওয়া যায়। এ ছাড়া শহরের পেট্রলপাম্প মোড়ে কার-মাইক্রোবাস ভাড়া পাওয়া যায়। সারা দিনের জন্য দূরত্ব বিশেষে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে।

Monday, August 11, 2014

Valentine’s Day in Asia

Valentine’s Day in western countries is celebrated by everyone from young school children to senior couples who have been married for decades. It’s usually a pretty standard affair – a card, a romantic dinner, chocolates, a gift, and – for the truly dedicated – engagements or weddings.
But in Asia – where western traditions often have to be modified to fit around long-established cultural norms – Valentine’s Day takes on interesting new dimensions.
For instance, in China, there are several important rules one must observe if they want to impress someone. Do not, under any circumstances, give an umbrella or a fan. This is because the Chinese word for both sounds similar to the Chinese word for “to leave” or “to separate,” which is definitely not what Valentine’s Day is about. Similarly, avoid shoe shopping, since shoes represent someone who is ready to walk away.
In Thailand, where PDA’s (public displays of affection) are frowned upon, police can often be seen strolling around areas popular with young people, who just love to sneak away to a secluded area for some smooching time. A loud “Ahem!” from a police officer usually kills the mood. Stunt weddings are also popular here, such as getting married underwater while wearing scuba gear, or while rappelling down a cliff face. And in 2006, one bug-loving couple got married – her with live scorpions on her dress, and him with a live centipede in his mouth!

Japan makes sure that both guys and girls benefit around Valentine’s Day. On the main holiday, women are expected to give gifts and chocolate to men, especially co-workers. In big offices, this can get quite expensive! But no worry – on March 14 the Japanese celebrate White Day, where men are expected to give a gift to every girl who gave them a gift. And don’t forget – it should be bigger or nicer than the one they got!
Korea has similar customs to Japan – Valentine’s Day followed by White Day – but they take it one step further. On April 14, those without sweethearts will gather in groups and eat jajangmyeon – noodles with black bean sauce – to celebrate their proud and dignified single status!
And lest we forget about the Philippines, the island country has become known in recent years for its mass weddings, especially popular on Valentine’s Day. Dozens or even hundreds of couples at a time gather to get married at the same time by an official who blesses them all and declares their union valid by law. It sure must cut down on the cost of a wedding!

Is there anything we missed? What other Valentine’s Day traditions are observed in Asia?

Pleasure in Paris

Getting around is a pleasure in Paris—especially if you’re into cycling or cruising the River Seine. But in even more practical terms, this is a city that knows how to organize public transport. Between the metro, light rail, tram and bus lines, you’re able to get anywhere in the city center on relatively short notice. And in all honesty, even walking is a pleasure in a city that’s as chock full of attractions as this.
For transport purposes, the city is divided into six different zones (though you’ll probably be spending most of your time in Zones 1 and 2). Metro tickets can purchased from vending machines in the stations and also provide access to buses and trams. Save money by buying them in bundles of ten (called a carnet), or you can even pick up daily or weekly passes. The Paris Visite pass is intended especially for tourists.
Without further ado, here’s a breakdown of Paris’ public transit options:
Metro: With 14 major lines, two secondary ones and a whopping 301 stations, the Paris metro is really all you need to get around this city. It’s fast, convenient and relatively safe. Each line is colored and numbered, and signs clearly display the name of terminus for a given line in a particular direction.
The tangle of metro lines crisscrossing Paris can seem overwhelming, but taking advantage of the metro is relatively straightforward. Just make sure that you don’t follow the signs for exit (sortie) when what you really wanted to do was catch a transfer (correspondance) to another line.
A single ticket allows one ride between any two metro stations, regardless of how many transfers you make in the process. However, the entirety of this one-way journey needs to be completed within 90 minutes. You can also purchase a Mobilis ticket, which allows unlimited travel within specific zones for a full day.  

Light Rail: The Réseau Express Régional (RER) train is a commuter network that also serves the city center. It’s actually faster than the metro, though it doesn’t stop at nearly as many stations. Within Zone 1, you can board an RER train as a transfer from the metro. For tourists’ purposes, the RER is more convenient than the metro for visiting the Panthéon and the Eiffel Tower.
Buses: If you feel like the metro is depriving you of sightseeing opportunities, hop on a bus and see the city while you travel. They use the same ticketing system as the metro, but you can also purchase a ticket from the driver. Just remember that tickets purchased from the driver don’t allow for any transfers.
Tram: Trams went out of Parisian fashion in the 1950s, but they’re creeping back on the scene now. There are three lines, and they technically operate as part of the bus network. If you’re here for the sights of Paris, you probably won’t have much reason to board a tram, as they operate on the fringes of the city. 
Taxis: Paris is serviced by roughly 15,500 taxis, which honestly sounds like a lot. It’s not. Flagging one down can be a challenge. They come in all colors, but just make sure you stick to the licensed cabs (displaying a ‘Taxis Parisiens’ sign on top). 
Boat: The Batobus cruises the Seine and takes a hop-on, hop-off approach to stopping by riverside attractions. Boats stop at Notre Dame, the Louvre, the Eiffel Tower, Champs-Élysées and a few other tourist attractions, so you can easily plan a day of sightseeing along the river. Tickets are only sold as day passes.

Bicycle: A lot of cities around the world have tried out public cycling schemes, but Paris nailed it with Vélib’. Even the name is awesome—a contraction of vélo (bicycle) and liberté (freedom). The city has more than 1,450 stations, which works out to one every 300 meters. You have to open an account with a credit card and put down a refundable €150 deposit. Then it’s only a matter of picking up a bike from one station and dropping it at any other. The first 30 minutes are free and after that you pay a modest hourly rate deducted from your card.

কপোতাক্ষের বাঁকে বাঁকে

কার কাছে যেন শুনেছিলাম গল্পটা। এক আগন্তুক বাংলার কোনো এক গাঁয়ে গিয়ে এক লোকের কাছে জানতে চাইলেন, এখানে কপোতাক্ষ নদ কোথায়। লোকটি আগন্তুককে বললেন, যে নদীতে দেখবেন কোনো পালতোলা নৌকা চলে না, ধরে নেবেন সেটাই কপোতাক্ষ নদ।’
কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজড়িত সেই নদ দেখব, এমন আশা অনেক দিনের।
‘সতত হে নদ, তুমি পড় মোর মনে।
সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।’
কবির লেখা এ লাইন দুটো যেন মনে গেঁথে ছিল। হঠাৎ করেই সুযোগ জুটে গেল। সিইজিআইএস থেকে পরিবেশ গবেষণার কাজে যেতে হয়েছিল যশোর। আর বেশ কটা দিন পথ চলতে হয়েছিল সেই কপোতাক্ষের বাঁকে বাঁকে। সে কথাই লিখছি।
যশোর নেমে যাত্রা করলাম গঙ্গানন্দপুর গ্রামের উদ্দেশে। গ্রামের ভেতর পায়ে হেঁটে ২০ গজ এ গানোর পরই প্রথমে কপোতাক্ষ নদের সঙ্গে দেখা। নদীতে কচুরিপানা থাকে জানি, কিন্তু কপোতাক্ষ নদে কচুরিপানা দেখে মনে হলো এত কচুরিপানা দেশের অন্য কোনো নদীতে নেই। পালতোলা নৌকা চলবে কী করে? নদের পানি শান্ত ও স্থির। এক বৃদ্ধ তালের ডোঙায় বসে আছেন মাছ ধরার জন্য। নদের দুই পাড়েই সবুজের সমারোহ। কয়েকটা জলমোরগ ঘোরাফেরা করছে। মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে কচুরির বনে। পাখির ছবি তুলতে দেখে গাঁয়ের এক ছেলে আমাকে দুর্গাটুনটুনির বাসা দেখাতে নিয়ে গেল।

এবার পৌঁছলাম ঝিকরগাছা। যশোর রোড়ের বিখ্যাত সেই সব রেইনট্রির সারি প্রথমে চোখে পড়বে এখানে। ঝিকরগাছা গিয়েও নদের সেই একই রূপ। তবে এখানে কচুরিপানা আরও বেশি।
এরপর পানিসারা হয়ে হরিহরনগর যাওয়ার পথে খেজুরগাছের সারি দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। বাংলাদেশের সব খেজুরগাছ যেন নিয়ে আসা হয়েছে যশোরের মাঠেঘাটে। গোপালগঞ্জ যেমন তালগাছের জন্য বিখ্যাত, যশোর তেমনি খেজুরগাছের জন্য। এরপর জগিখালী, ত্রিমোহনীর পথ ধরলাম। ত্রিমোহনী এসে আরেকটি নদীর সঙ্গে দেখা হলো, নাম তার বুড়িভদ্রা। বিকেল গড়িয়ে এল। পথে নীলগলা বসন্তবৌরির ডাকে মনটা আনচান করতে থাকে। বাংলাদেশের আর কোনো জেলায় এত নীলগলা বসন্তবৌরি দেখিনি। চাকলা নামের এক গ্রামে এসে দেখি রশি টানা খেয়া। নদের দুই পাড়ে খুঁটি গেড়ে এপার-ওপার রশি বেঁধে দেওয়া। নদীতে আছে নৌকা। নৌকায় দাঁড়িয়ে যদি কেউ রশি টান দেয়, তাহলে নৌকা সামনের দিকে চলে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। ফেরার পথে প্রায় ৩০টি গরুর গাড়ির দেখা মিলল। ছেলেমেয়ে, যুবক, বুড়ো সবাই মিলে বেড়াতে বের হয়েছেন। নানা রকম সাজসজ্জা, গান ও বাদ্যযন্ত্রের পসরা সাজিয়ে তাঁরা চলছেন।
পরের দিন সকালে সাগরদাঁড়ির পথ ধরি। কেশবপুর উপজেলায় এসে কিছুক্ষণ যশোরের হনুমানদের খোঁজ করি। কিন্তু এ যাত্রা তাদের দেখা মিলল না। ওরা দলবেঁধে অন্যদিকে চলে গেছে। ঘন্টাখানেকের মধ্যেই চলে আসি সাগরদাঁড়ি। কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভিটায়। নদের ঘাটেই প্রথম যাই। ঘাটে নাও ভেড়ানো আছে। কয়েক ঝাঁক মাঝলা ও গো-বগ খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে। দত্তবাড়ির ঘাট থেকে একটু দূরেই কবির বাড়ি। বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাড়ি ও অন্য সবকিছু সংরক্ষণ করা হয়েছে। টিকিট কেটে কবির বাড়ি ঢুকতে হবে। বেশ কিছু বড় আমগাছ আছে বাড়িটিতে। আরও আছে ঘাট বাঁধানো পুকুর। পাতিমাছরাঙা সব সময় আনাগোনা করে এ পুকুরে। বাড়ির ভেতরে আছে কবিপরিবারের ব্যবহূতসামগ্রী। যেমন—দা, আলনা, খাট, থালা, কাঠের সিন্দুক, কবির লিখিত পাণ্ডুলিপি, পারিবারিক ছবিসহ নানা কিছু।
সাগরদাঁড়ি দেখে কুমিরা, ইসলামকাঠি হয়ে আমরা তালা উপজেলায় পৌঁছালাম। পথে বেশ কিছু বিল পড়ে। শালিখা ও জালালপুর বিল এর মধ্যে অন্যতম। তালা গিয়ে কপোতাক্ষ নদে জোয়ার দেখা গেল। কিছু বড় নৌকা ছিল নদে। জোয়ারের পানিতে বেশ পলি। পলি জমে ওখানে নদ ভরাট হয়েযাচ্ছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পানির প্রবাহ। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা গিয়ে দেখা গেল নদের পাশের কেওড়াগাছ মরে গেছে। নিয়মিত জোয়ার-ভাটা হলে এ গাছগুলো মারা যেত না।
কপোতাক্ষ নদের উৎপত্তি দর্শনার কাছে মাথাভাঙা নদী থেকে। এরপর চৌগাছা, ঝিকরগাছা, চাকলা, ত্রিমোহনী, জীবনগর, কোটচাঁদপুর, সাগরদাঁড়ি, তালা, কপিলমনি, বারুলী, চাঁদখালী, বড়দল, আমাদী, বেদকাশী প্রভৃতি স্থানের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সুন্দরবনের মধ্যে খোলপেটুয়া নদীর সঙ্গে মিশেছে। এখন সাগরদাঁড়ি থেকে কপিলমনিয়া পর্যন্ত হাঁটু কিংবা কোমর অবধি পানি। নিয়মিত জোয়ার-ভাটা নেই বলে স্রোতও নেই। ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবে কপোতাক্ষের সঙ্গে গঙ্গা নদীর মূল স্রোতধারা বন্ধ হয়ে গেছে। কেবল বর্ষার সময় নদীতে অল্প পরিমাণ পানি আসে। এখন একমাত্র বর্ষার পানিই কপোতাক্ষের পানির প্রধান উৎস। কথিত আছে, কপোতের অক্ষের (কবুতরের চোখ) মতো স্বচ্ছ পানি বলে এ নদের নাম হয়েছিল কপোতাক্ষ। কিন্তু কপোতাক্ষের পানি আজ ঘোলা। এলাকাবাসীর অভিমত, ঠিকভাবে খনন করা হলে আবার কিছুটা হলেও সজিব হয়ে উঠবে কপোতাক্ষ। সেদিন হয়তো একটি পালতোলা নৌকার

দেখা পাবেন সেই আগন্তুক।
কীভাবে যাবেন ও কোথায় থাকবেন
সাগরদাঁড়িতে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি যেতে চাইলে প্রথমে যেতে হবে যশোর। এরপর যশোর শহর থেকে বাসে করে কেশবপুর। সেখান থেকে সিএনজি অটোরিকশা বা মাইক্রোবাসে করে সাগরদাঁড়ি যেতে হবে।
যশোর শহর থেকে সাগরদাঁড়ি পর্যন্ত প্রায় দু্ই-আড়াই ঘণ্টা পথ। দত্তবাড়ির কাছেই আছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের রেস্টহাউস। সেখানে থাকতে পারেন অথবা থাকতে পারেন কেশবপুর উপজেলা ডাকবাংলোতে। তবে আগে থেকেই কথা বলে রাখতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ বেড়ানো

ঢাকার পার্শ্ববর্তী অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র এবং নদীবন্দর নারায়ণগঞ্জ। জেলার উত্তরে নরসিংদী ও গাজীপুর জেলা, দক্ষিণে মুন্সীগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে ঢাকা জেলা এবং পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলা। এ জেলায় বেড়ানোর জায়গাগুলো নিয়ে  এবারের বেড়ানো।
হাজীগঞ্জ দূর্গ : নারায়ণগঞ্জ জেলাশহরের কিল্লারপুলে অবস্থিত ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ দুর্গ। বাংলার বারভূঁইয়াদের অন্যতম ঈসা খাঁর কেল্লা হিসেবেও অনেকের কাছে এটি পরিচিত। নদীপথে মগ ও পর্তুগিজদের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য মীরজুমলার শাসনামলে এ দুর্গ নির্মিত বলে ঐতিহাসিকগণ মনে করেন। চতুর্ভুজাকৃতি এই দুর্গের প্রাচীরে রয়েছে বন্দুক বসিয়ে গুলি চালাবার ফোকর।
সোনাকান্দা দুর্গ : শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব তীরে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দরে অবস্থিত এ জলদুর্গটি। হাজীগঞ্জ দুর্গের প্রায় বিপরীত দিকেই এর অবস্থান। নদীপথে ঢাকার সঙ্গে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ নদীপথগুলোর নিরাপত্তার জন্য মুঘল শাসকগণ কতগুলো জলদুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সোনাকান্দা দুর্গ।
বিবি মরিয়ম মসজিদ ও সমাধি : নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত এ মসজিদটি হাজীগঞ্জ মসজিদ নামেও পরিচিতি। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি শায়েস্তা খাঁ কর্তৃক ১৬৬৪-১৬৮৮ সালে নির্মিত বলে ঐতিহাসিকগণ মনে করেন। মসজিদের কাছে তাঁর কন্যা বিবি মরিয়মের সমাধি রয়েছে বলেই মসজিদটির নাম বিবি মরিয়ম মসজিদ বলে অনেকে মনে করেন।
কদমরসুল দরগা : নারায়ণগঞ্জ শহরের বিপরীত দিকে শীতলক্ষা নদীর পূর্ব পাড়ে নবীগঞ্জে অবস্থিত কদমরসুল দরগা। এখানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এর কদম মোবারকের ছাপ সংবলিত একটি পাথর রয়েছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সম্রাট অকবরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী আফগান নেতা মাসুম খান কাবুলি পদচিহ্ন সংবলিত এ পাথরটি একজন আরব বণিকের কাছ থেকে কিনেছিলেন। ঢাকার জমিদার গোলাম নবী ১৭৭৭-১৭৭৮ সালে এ সৌধটি নির্মাণ করেন। আর কদম রসুল দরগার প্রধান ফটকটি গোলাম নবীর ছেলে গোলাম মুহাম্মদ ১৮০৫-১৮০৬ সালে নির্মাণ করেন।

শীতলক্ষা নদী : নারায়ণগঞ্জের প্রধান নদী। এক সময় বিশ্বসমাদৃত বাংলাদেশের মসলিন শিল্প গড়ে উঠেছিল শীতলক্ষার দুই তীরে। এখন বিভিন্ন কলকারখানায় পরিপূর্ণ নদীর দুই পাশ। নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে শুরু করে কালীগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ পথ নৌ ভ্রমণে ভালো লাগবে সবার।
রূপগঞ্জ জামদানি পল্লি : শীতলক্ষার তীরে রূপগঞ্জ থানার রূপসীতে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় জামদানী পল্লি। রূপসী বাজার ও এর আশপাশে শতশত জামদানি শিল্পী দিন-রাত তাঁতে বুনেন নানা রকম শৈল্পিক জামদানি। তুলনামূলক কম দামে এখান থেকে ভালো মানের জামদনি শাড়ি কেনা যায়।
মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি : নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের মুড়াপাড়ায় রয়েছে প্রাচীন একটি জমিদার বাড়ি। বর্তমানে এ বাড়িতে চলছে মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের কার্যক্রম। জমিদার বাড়ির সামনেই রয়েছে বিশাল আকৃতির পুকুর। প্রাচীন এ প্রাসাদটি বেশ আকর্ষণীয়। প্রায় ৯৫টি কক্ষ সংবলিত এ প্রাসাদে অতিথিশালা, নাচঘর, পূজামণ্ডপ, কাছারিঘর, আস্তাবলসহ আরো বিভিন্ন অংশে বিস্তৃত।
রাসেল পার্ক : মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির পাশেই বেসরকারি একটি বনভোজন কেন্দ্র রাসেল পার্ক। নানারকম গাছ-গাছালি ছাড়াও এখানে আছে ছোট একটি চিড়িয়াখানা। সপ্তাহের প্রতিদিনই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে এটি।
সুলতান গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের সমাধি : নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগড়াপাড়া এলাকায় অবস্থিত বাংলার স্বাধীন সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের সমাধি। পাথরে তৈরি এ সমাধিসৌধটি ১৪১০ সালে নির্মিত হয়। সুলতান মারা যান ১৪০২ সালে। এ সমাধিসৌধের পূর্ব পাশের ইট-নির্মিত সমাধিটি সুলতানের প্রধান বিচারপতি কাজী সিরাজউদ্দিনের বলে অনুমান করা হয়।
লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন : জেলার সোনারগাঁও উপজেলায় অবস্থিত লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগড়াপাড়া থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। বাংলার বারভূইঁয়াদের অন্যতম ঈসা খাঁর শাসনামলে বর্তমান সোনারগাঁও বাংলার রাজধানী ছিল। বর্তমানে এখানে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের একটি জাদুঘর ছাড়াও প্রাচীন অনেক নিদর্শন বিদ্যমান। ১৯৭৫ সালে এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর। শনিবার থেকে বুধবার প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে লোকশিল্প জাদুঘর। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা, মাঝে ১২ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মধ্যাহ্ন বিরতি। বৃহস্পতিবার লোকশিল্প জাদুঘর বন্ধ থাকে। কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে প্রবেশমূল্য দশ টাকা।
পানাম নগর : লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে গোয়ালদী গ্রামে অবস্থিত ঐতিহাসিক পানামনগর। প্রাচীন এ নগরীর ধ্বংসাবশেষ এখনো বিদ্যমান এখানে। পানামনগরের পাশেই রয়েছে ঐতিহাসিক পনাম পুল।

গোয়ালদী শাহী মসজিদ : পানামনগর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত ঐতিহাসিক গোয়ালদী শাহী মসজিদ। ঐতিহাসিকগণের মতে মসজিদটি ১৫১৯ সালে নির্মিত। একগম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদটি বাইরে পোড়ামাটির অলংকরণে সমৃদ্ধ।
কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের পথে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলাচল করে আসিয়ান, বন্ধন, উৎসব, সেতু, আনন্দ ইত্যাদি পরিবহনের বাস। ঢাকার বায়তুল মোকাররম ও গুলিস্তান থেকে এসব বাস পাঁচ মিনিট পর পর ছেড়ে যায় নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে। ঢাকা থেকে সোনারগাঁও যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো সার্ভিস বোরাক, সোনারগাঁও ইত্যাদি। এছাড়া ঢাকা থেকে কুমিল্লা, দাউদকান্দিগামী যে কোনো বাসে উঠে মোগড়াপাড়া নেমে সহজেই আসা যায় সোনারগাঁও।

মানিকগঞ্জ বেড়ানো

ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা মানিকগঞ্জ। এর উত্তরে টাঙ্গাইল জেলা, দক্ষিণে ফরিদপুর ও ঢাকা জেলা, পূর্বে ঢাকা জেলা এবং পশ্চিমে পাবনা ও রাজবাড়ী জেলা অবস্থিত। পদ্মা, যমুনা, ধলেশ্বরী, ইছামতি, কালিগঙ্গা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ নদী এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে বেড়ানোর তথ্য নিয়ে এবারের বেড়ানো।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি
সুরম্য এ জমিদার বাড়িটি জেলার সাঁটুরিয়ায় অবস্থিত। বালিয়াটির জমিদাররা আঠারো শতকের প্রথম ভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত প্রায় দু’শ বছর নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করেন। আঠারো শতকের মধ্যভাগে জনৈক লবণ ব্যবসায়ী জমিদার গোবিন্দরাম শাহ বালিয়াটি জমিদারবাড়ি নির্মাণ করেন। আর ক্রমান্বয়ে তার উত্তরাধিকারীরা এখানে নির্মাণ করেন আরো বেশ কটি স্থাপনা। এখানে পূর্ববাড়ি, পশ্চিমবাড়ি, উত্তরবাড়ি, মধ্যবাড়ি এবং গোলাবড়ি নামে পাঁচটি ভবন ছিল। আর জমিদারবাড়ির এ বিভিন্ন অংশ বালিয়াটি জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকারী কর্তৃক তৈরি হয়েছিল। মূল প্রসাদ কমপ্লেক্সটি একই রকম পাঁচটি অংশ পৃথকভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে পূর্বের অংশটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও বাকি চারটি টিকে আছে এখনও। মূল ভবনগুলোর সম্মুখভাগে নানারকম কারুকাজ আজ মূর্তি এখনও বিদ্যমান।
বালিয়াটি জমিদারবাড়ির বিশাল কমপ্লেক্সটি উঁচু দেয়ালে চারদিক ঘেরা। এখনও টিকে রয়েছে সেই দেয়াল। এ দেয়ালের মাঝে এখন রয়েছে চারটি সুদৃশ্য ভবন। আর ভবনগুলোর সামনের বেষ্টনী দেয়ালে রয়েছে চারটি প্রবেশ পথ। চারটি ভবনের পেছন দিকে রয়েছে আরো চারটি ভবন। চারটি প্রবেশ পথের চূড়ায় রয়েছে পাথরের তৈরি চারটি সিংহমূর্তি।
রাম কৃষ্ণ মিশন
বালিয়াটি জমিদার বাড়ির পাশেই রয়েছে রাম কৃষ্ণ মিশন। ১৯১০ সালে বালিয়াটিতে শ্রী রাধিকা চরণ চৌধুরি রাম কৃষ্ণ মিশন দেবাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এ দেবাশ্রমে একটি উপসনালয় এবং একটি গ্রন্থাগার আছে। ভারতের কেন্দ্রীয় রাম কৃষ্ণ মিশন কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের দশটি মিশনের মধ্যে এটি অন্যতম একটি ।
গৌরাঙ্গ মঠ

রামকৃষ্ণ মিশনের সামনে রয়েছে বিখ্যাত গৌরাঙ্গ মঠ। জমিদার মনমোহন রায় চৌধুরি ১৯২৫ সালে তার সহধর্মিনী ইন্দুবালা এবং কন্যা সুনীতিবালার স্মৃতির উদ্যেশ্যে ভারতের বিখ্যাত গদাই গৌরাঙ্গ মঠের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এ শাখা মঠ প্রতিষ্ঠা করেন। মঠটির ভেতরে গদাই গৌরাঙ্গ মূর্তিটি এখন আর মন্দিরে নেই। ৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পাক হানাদার বাহিনী পাথরের তৈরি মূর্তিটি ধ্বংস করে ফেলে।
ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়
বালিয়াটি জমিদার বাড়ির কাছেই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হলো ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদাালয়। বালিয়াটির অন্যতম জমিদার ঈশ্বরচন্দ্র রায়ের নামানুসারে এ স্কুলের নামকরণ করা হয়েছে। ১৯১৫-১৬ সালে ঈশ্বরচন্দ্রের পুত্র হরেন্দ্র কমুার রায় চৌধুরী স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। হরেন্দ্র কুমার তৎকালীন সময়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা ব্যয় করে স্কুলটির পাকা ভবন নির্মাণ করেছিলেন।
তেওতা জমিদার বাড়ি
জেলার শিবালয় উপজেলায় অবস্থিত প্রাচীন জমিদার বাড়ি। বাবু হেমশংকর রায় চৌধুরী এবং জয়শংকর রায় চৌধুরী নামে দুই জমিদার ভাই সুরম্য এ বাড়িটিতে থেকে জমদিারি পরিচালনা করতেন। বর্তমানে এটি ধ্বংসের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছে। ভগ্নপ্রায় ৫৫ টি কক্ষ এখনও এ বাড়িটিতে অবশিষ্ট আছে।
শ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি
মানিকগঞ্জ শহরে অবস্থিত ১৮৯৫-৯৬ সালে নির্মিত শ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি। এ মন্দিরে শ্রী আনন্দময়ী কালী মায়ের প্রস্তর মূর্তি আছে। প্রতি বছর রথ উপলক্ষে এখানে লোকজ মেলা বসে। এছাড়া এখানে নিয়মিত ধর্মসভা, নামকীর্তন, যাত্রাপালাসহ নানা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
মাচাইন মসজিদ ও মাজার
সুলতানি আমলের প্রাচীন একটি স্থাপনা মাচাইন মসজিদ। এটি জেলার মাচাইন গ্রামের নামে এর নামকরণ হয়েছে। জনশ্রুতি আছে এখানে শাহ রুস্তুম নামে একজন দরবেশ বাঁশের মাচায় বসে ধ্যান মগ্ন থাকতেন। মসজিদের পাশেই এ দরবেশের মাজার অবস্থিত।
আরিচা ঘাট ও যমুনা

মানিকগঞ্জের একসময়ের ব্যস্ত জনপদ আরিচা ঘাট। ফেরি ঘাট অন্যত্র স্থানান্তরের কারণে এখন এর ব্যস্ততা অনেক কমে এসেছে। এ জায়গা থেকে যমুনার সৌন্দর্যও বেশ সুন্দর। এখানে যমুনার চরে নৌ ভ্রমণও বেশ আনন্দদায়ক।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার গুলিস্তান থেকে শুভযাত্রা, বিআরটিসি পরিবহন, গাবতলী থেকে যাত্রীসেবা, পদ্মা লাইন, নবীন বরণ, ভিলেজ লাইন, জনসেবা পরিবহন, বাবু বাজার থেকে ছালছাাবিল, শুকতারা পরিবহনে চড়ে যাওয়া যায় মানিকগঞ্জ সদরে। ভাড়া ৪০-৫০ টাকা। ঢাকা থেকে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি ও এর আশপাশের জায়গাগুলো দেখার জন্য এসব বাসে চড়ে কালামপুর নেমে সেখান থেকে লোকাল বাসে সাঁটুরিয়া আসা যায়। মানিকগঞ্জ শহর থেকেও সাঁটুরিয়ার বাস আছে। ভাড়া ১৫ টাকা।
কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে দিনে দিনেই বেরিয়ে আসা যায় মানিকগঞ্জ। আর থাকার জন্য ভালো মানের কোন হোটেলও নেই এখানে। একান্ত জরুরি থাকতে হলে সাধারণ মানের দু’একটি হোটেলের ঠিকানা হেয়া হলো। শহরের শহীদ রফিক সড়কে হোটেল, মানিকগঞ্জ আবাসিক বোর্ডিং, ফোন- ০৬৫১-৬১৩৫৯। মানিকগঞ্জ বাস স্টেশনে হোটেল নবীন, ফোন- ০১৭১২৬১১৪৫২। এসব হোটেলের প্রতিদিনের ভাড়া এক শয্যার কক্ষ ৫০-১০০ টাকা, দ্বি-শয্যার কক্ষ ১০০-১৫০ টাকা।

কুয়াকাটার ফাতরার বন

আমাদের দেশে ঘুরে দেখার মতো অনেক পরিচিত জায়গা আছে। আবার এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলো কম পরিচিত হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এমনই একটি জায়গা হলো কুয়াকাটার কাছে ফাতরার বন।
কুয়াকাটা যান অনেকেই। কিন্তু এর কাছেই ফাতরার বনে অনেকেই যায় না। ওই বনে যাওয়ার জন্য অবশ্য খুব নিরাপদ ব্যবস্থা না থাকাটাও অবশ্য একটা কারণ। মাসখানেক আগে সাত বন্ধু মিলে কুয়াকাটা বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানে একদিন কাটিয়ে পরদিন তথ্য সংগ্রহ করে সকাল নয়টায় ফাতরার বনের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলাম। কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত থেকে ছোট্ট একটা ট্রলারে করে শুরু হয় আমাদের সমুদ্রযাত্রা। ছিল ভয় পাওয়ার মতো যথেষ্ট উত্তাল ঢেউ। তাতেই বোঝা যায়, কেন খুব একটা পর্যটকদের আনাগোনা নেই এ পথে। এ পথে যেতে একটু রোমাঞ্চপ্রিয় হতে হয়। এক থেকে দেড় ঘণ্টা ট্রলারে টানা চলার পর চোখে পড়ল সাত-আট কিলোমিটার বিস্তৃত সারি সারি গাছ আর ঘন বনজঙ্গল। দূর থেকে মনে হলো একটা সবুজ বনের দ্বীপ। শেষে ট্রলারটি বনের কোলঘেঁষে একটা খালে ঢুকল। এই খালটিই বনের গভীরে চলে গেছে। খালের মধ্য দিয়ে কিছু দূর এগোনোর পর ট্রলারটি ছোট জেটির মতো এক জায়গায় থামল। প্রথমে মনে হচ্ছিল, সুন্দরবনের কোনো খাল পার হচ্ছি। একে একে সবাই নামলাম ট্রলার থেকে। নেমেই দেখা গেল, বনের মধ্যে সাজানো-গোছানো একটি পুকুর। এর পাশে বাংলোর মতো একটা বাড়ি। আর আশপাশে দু-একজন মানুষ। জিজ্ঞেস করতেই তাঁরা বললেন, এটা আমতলী ফরেস্ট রেঞ্জের বাংলো। এই বনের মাঝেমধ্যে জেলেরা মাছ ধরতে আসে। এ ছাড়া মানুষ বা কোনো বন্যপ্রাণীর আনাগোনাও নেই। চারদিকে শুধুই ঘন বন। প্রায় ঘণ্টাখানেক ঘন বনের মধ্যে ঘুরেফিরে বেরিয়ে আবার ট্রলারে চড়লাম। ট্রলারের চালককে খালের মধ্য দিয়ে বনের আরো গভীর যেতে বললাম। চারদিকে এত ঘন জঙ্গলে ভরা ভাবতেই পরিনি। চারদিকে নিস্তব্ধতা শুধু। মোট ঘণ্টা দুয়েক থেকে আবার ফেরার পধ ধরলাম নদী হয়ে সমুদ্রপাড় ঘেঁষে।

যাবেন কীভাবে
ঢাকা থেকে সড়কপথে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। গাবতলী থেকে বাস ছাড়ে। কুয়াকাটায় থাকার জন্য বন বিভাগের রেস্টহাউস ও বেসরকারি হোস্টেল রয়েছে। কুয়াকাটা থেকে ট্রলারে করে ফাতরার বনে যেতে পারেন।

Saturday, August 9, 2014

India Mumbai Tour

Ever since the opening of the Suez Canal in 1869, the principal gateway to the Indian Subcontinent has been Mumbai (Bombay), the city Aldous Huxley famously described as “the most appalling of either hemisphere”. Travellers tend to regard time spent here as a rite of passage to be survived rather than savoured. But as the powerhouse of Indian business, industry and trade, and the source of its most seductive media images, the Maharashtran capital can be a compelling place to kill time. Whether or not you find the experience enjoyable, however, will depend largely on how well you handle the heat, humidity, traffic fumes and relentless crowds of India’s most dynamic, Westernized city.
First impressions of Mumbai tend to be dominated by its chronic shortage of space. Crammed onto a narrow spit of land that curls from the swamp-ridden coast into the Arabian Sea, the city is technically an island, connected to the mainland by bridges and narrow causeways. In less than five hundred years, it has metamorphosed from an aboriginal fishing settlement into a megalopolis of more than sixteen million people – India’s largest city and one of the biggest urban sprawls on the planet. Being swept along broad boulevards by endless streams of commuters, or jostled by coolies and hand-cart pullers in the teeming bazaars, you’ll continually feel as if Mumbai is about to burst at the seams.
The roots of the population problem and attendant poverty lie, paradoxically, in the city’s enduring ability to create wealth. Mumbai alone generates one third of India’s tax income, its port handles half the country’s foreign trade, and its movie industry is the most prolific in the world. Symbols of prosperity are everywhere: from the phalanx of office blocks clustered on Nariman Point, Maharashtra’s Manhattan, to the expensively dressed teenagers posing in Colaba’s trendiest nightspots.
The flip side to the success story is the city’s much-chronicled poverty. Each day, an estimated five hundred economic refugees pour into Mumbai from the Maharashtran hinterland. Some find jobs and secure accommodation; many more end up living on the already overcrowded streets, or amid the squalor of some of Asia’s largest slums, reduced to rag-picking and begging from cars at traffic lights.

However, while it would definitely be misleading to downplay its difficulties, Mumbai is far from the ordeal some travellers make it out to be. Once you’ve overcome the major hurdle of finding somewhere to stay, you may begin to enjoy its frenzied pace and crowded, cosmopolitan feel.
Nowhere reinforces your sense of having arrived in Mumbai quite as emphatically as the Gateway of India, the city’s defining landmark. Only a five-minute walk north, the Prince of Wales Museum should be next on your list of sightseeing priorities, as much for its flamboyantly eclectic architecture as for the art treasures inside. The museum provides a foretaste of what lies in store just up the road, where the cream of Bartle Frere’s Bombay – the University and High Court – line up with the open maidans on one side, and the boulevards of Fort on the other. But for the fullest sense of why the city’s founding fathers declared it Urbs Prima in Indis, you should press further north still to visit the Chhatrapati Shivaji Terminus (CST), the high-water mark of India’s Raj architecture.
Beyond CST lie the crowded bazaars and Muslim neighbourhoods of central Mumbai, at their liveliest and most colourful around Crawford Market and Mohammed Ali Road. Possibilities for an escape from the crowds include an evening stroll along Marine Drive, bounding the western edge of downtown, or a boat trip out to Elephanta, a rock-cut cave on an island in Mumbai harbour containing a wealth of ancient art.


India Gujaratis Tour

Heated in the north by the blistering deserts of Pakistan and Rajasthan, and cooled in the south by the gentle ocean breeze of the Arabian Sea, Gujarat forms India’s westernmost bulkhead. The diversity of its topography – forested hilly tracts and fertile plains in the east, vast tidal marshland and desert plains in the Rann of Kutch in the west, with a rocky shoreline jutting into its heartland – can be compared to the multiplicity of its politics and culture. Home to significant populations of Hindus, Jains, Muslims and Christians, as well as tribal and nomadic groups, the state boasts a patchwork of religious shrines and areas steeped in Hindu lore. Gujarat is the homeland of Mahatma Gandhi, born in Porbandar and a long-time resident of Ahmedabad. In line with his credo of self-dependence, Gujaratis consistently rank at or near the top of the chart in terms of India’s economic output, and have fanned around the world to settle abroad.
The region’s prosperity dates as far back as the third millennium BC, when the Harappans started trading shell jewellery and textiles. The latter, Jain-dominated industry, remains an important source of income to the state. India’s most industrialized state, Gujarat also boasts some of the Subcontinent’s biggest oil refineries; thriving cement, chemicals and pharmaceutical manufacturing units; and a lucrative ship-breaking yard at Alang. Kandla is one of west India’s largest ports, while much of the country’s diamond-cutting and-polishing takes place in Surat, Ahmedabad and Bhavnagar. Rural poverty remains a serious problem, however, and health and education developments still lag behind economic growth.
Despite Gandhi’s push for political change through non-violent means, his home state has often followed a different course, and Muslim-Hindu tensions have boiled more than to violence on a cyclical basis. Following the devastating January 2001 earthquake, centred in Kutch, the state suffered India’s worst communal rioting since Partition, with more than a thousand people killed in 2002. Dozens more died in a 2008 string of bomb attacks in Ahmedabad. All these events added to the woes of a state already beleaguered by severe water shortages and drought.
Nevertheless, Gujarat has plenty to offer those who take time to detour from its more famous northerly neighbour Rajasthan, and it’s free of the hassle tourists often encounter there. The lure of important temple cities, forts and palaces is balanced by the chance to search out unique crafts made in communities whose way of life remains scarcely affected by global trends. Gujarat’s architectural diversity reflects the influences of its many different rulers – Buddhist Mauryans, Hindu rajas and Muslim emperors.

Ahmedabad, state capital until 1970 and the obvious place to begin a tour, harbours the first mosques built in the curious Indo-Islamic style, richly carved temples and step-wells dating from the eleventh century. Just north is the ancient capital of Patan and the Solanki sun temple at Modhera, while south is the Harappan site, Lothal. In the northwest, the largely barren region of Kutch was largely bypassed by Gujarat’s foreign invaders, and consequently preserves a village culture where crafts long forgotten elsewhere are still practised.
The Kathiawar Peninsula, or Saurashtra, is Gujarat’s heartland, scattered with temples, mosques and palaces bearing testimony to centuries of rule by Buddhists, Hindus and Muslims. Highlights include the superb Jain temples adorning the hills of Shatrunjaya, near Bhavnagar, and Mount Girnar, close to Junagadh. The temple at Somnath is said to have witnessed the dawn of time, and that at Dwarka is built on the site of Krishna’s ancient capital. At Junagadh, ancient Ashokan inscriptions stand a stone’s throw from flamboyant mausoleums and Victorian Gothic-style palaces. There’s plenty of scope for spotting wildlife, too, including Asia’s only lions, found in Gir National Park, blackbucks at Blackbuck National Park, and the Indian wild ass in the Little Rann Sanctuary. Separated from the south coast by a thin sliver of the Arabian Sea, the island of Diu, a Union Territory and not officially part of the state, is fringed with beaches, palm groves and whitewashed Portuguese churches.

Brief history

The first known settlers in what is now Gujarat were the Harappans, who arrived from Sindh and Punjab around 2500 BC. Despite their craftsmanship and trade links with Africans, Arabs, Persians and Europeans, the civilization fell into decline in 1900 BC, largely due to severe flooding. From 1500 to 500 BC, little is known about the history of Gujarat but it is popularly believed the Yadavas, Krishna’s clan, held sway over much of the state, with their capital at Dwarka. Gujarat’s political history begins in earnest with the powerful Mauryan empire, established by Chandragupta with its capital at Junagadh and reaching its peak under Ashoka. After his death in 226 BC, Mauryan power dwindled; the last significant ruler was Samprati, Ashoka’s grandson, a Jain who built fabulous temples at tirthas (pilgrimage sites) such as Girnar and Palitana. Rule then passed among a succession of warring dynasties and nomadic tribes throughout the first millenium AD, among them the native Gurjars (or Gujjar), from whom the modern state would derive its name.
In the eleventh and twelfth centuries, Gujarat came under the sway of the Solanki (or Chalukyan) dynasty, originating from a Gurjar clan, which issued in a golden era in the state’s architectural history. The Solankis built and rebuilt (following the devastating raid of Mahmud of Ghazni in 1027) splendid Hindu and Jain temples and step-wells throughout the state.
Muslim rule in Gujarat was established by the Khalji conquest in 1299. A century later, the Sultanate of Gujarat was founded when Muzaffar Shah declared independence from Delhi. Setting up a new capital at Ahmedabad, the Muzaffarid Dynasty ruled for two hundred years before the Mughal conquest of emperor Akbar in the sixteenth century. In the ensuing period, Muslim, Jain and Hindu styles were melded to produce remarkable Indo-Islamic mosques and tombs.
In the 1500s, the Portuguese, already settled in Goa, turned their attention to Gujarat. Having captured Daman in 1531, they took Diu four years later, building forts and typically European towns. The British East India Company set up its factory and headquarters in Surat in 1613, sowing the seeds of a prospering textile industry. British sovereignty over the state was established in 1818 when governor-generals signed treaties with about two hundred of Saurashtra’s princely and petty states. The introduction of machinery upgraded textile manufacture, bringing substantial wealth to the region while putting many manual labourers out of business. Their cause was valiantly fought by Gujarat-born Mahatma Gandhi, who led the momentous Salt March from Ahmedabad to Dandi. After Partition, Gujarat received an influx of Hindus from Sindh (Pakistan) and witnessed terrible sectarian fighting as Muslims fled to their new homeland.
In 1960, after the Marathi and Gujarati language riots (demonstrators sought the redrawing of state boundaries according to language, as had happened in the south), Bombay state was split and Gujarat created. The Portuguese enclaves were forcibly annexed by the Indian government in 1961. Post-Independence, Gujarat remained a staunch Congress stronghold until the fundamentalists of the BJP took control in 1991. The communal violence of 2002 pitted Muslim and Hindu neighbours against one another. More than a decade on, the religious and ethnic tension continues to cast a long shadow. Meanwhile, Gujarat remains one of India’s most wealthy and prosperous states.

কলাকোপা-বান্দুরা ঘুরে আসুন

জজবাড়ি মোটরসাইকেল থামিয়ে মাটিতে পা রাখতেই ঝোড়ো হাওয়া যেন আমার ওপর লাফিয়ে পড়ল। প্রবল বৈশাখ যেন তার দাপট দেখিয়ে গেল। এভাবেই প্রকৃতির অভ্যর্থনা পেলাম কলাকোপায়।
সামনে খেলারাম দাতা নির্মিত বিগ্রহ মন্দির। জলদস্যু থেকে দাতায় পরিণত হয়েছেন খেলারাম। তাঁর অনেক কীর্তিকলাপ ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা গ্রামের মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে আছে। লক্ষ্মীনারায়ণ বিগ্রহ মন্দিরটি তাঁর অমর কীর্তি। আমরা মন্দিরের ভেতর ঢুকলাম।
ঢাকা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ইছামতীর তীরে কলাকোপা-বান্দুরার অবস্থান। ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিশাল এক ভান্ডার কলাকোপা-বান্দুরা। উনিশ শতকেও এখানে জমিদারদের বসতি ছিল। প্রায় ২০০ বছরের ইতিহাসসমৃদ্ধ গ্রাম এই কলাকোপা-বান্দুরা। যা ছিল একসময় ব্যবসা-বাণিজ্যের তীর্থস্থান। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্যও চোখ জুড়ানো। যার প্রাণ ইছামতী নদী।
এখানে দেখার আছে অনেক কিছু। কোকিলপেয়ারী জমিদারবাড়ি বা জমিদার ব্রজেন সাহার ব্রজ নিকেতন, যা এখন জজবাড়ি নামে খ্যাত; ব্যবসায়ী রাধানাথ সাহার বাড়ি, শ্রীযুক্ত বাবু লোকনাথ সাহার বাড়ি, যার খ্যাতি মঠবাড়ি বা তেলিবাড়ি নামে; মধু বাবুর পাইন্নাবাড়ি, পোদ্দারবাড়ি, কালীবাড়ি এবং কলাকোপার কাছে সামসাবাদ তাঁতপল্লি, এর একটু দূরে আলানপুর তাঁতপল্লি। এ ছাড়া আছে হলিক্রস স্কুল এবং জপমালা রানির গির্জা, এর বাইরেও অনেক পুরোনো ভবন ও মঠ চোখে পড়বে কলাকোপা-বান্দুরায়।
নবাবগঞ্জ চৌরাস্তায় মহাকবি কায়কোবাদ চত্বর থেকে একটি সড়ক সোজা কলাকোপা চলে গেছে। অন্য সড়কটি একটু বামে কলাকোপা হয়ে বান্দুরার পথ ধরেছে। বামের এই পথ ধরে একটু সামনে এগোলেই একটি ভাঙা মন্দিরের দেখা মিলবে। এর পেছনে কোকিলপেয়ারী জমিদারবাড়ি। সামনের ভাঙা মন্দিরের মতোই ভগ্ন দশা তার। কোনো রকমে দাঁড়িয়ে থেকে তার অস্তিত্ব জানান দিয়ে চলেছে। তার পাশেই জমিদার ব্রজেন সাহার ব্রজ নিকেতন। আশির দশকের পর একটি বিচারক পরিবার এখানে বসবাস করতে শুরু করলে ব্রজ নিকেতন জজবাড়ি নাম গ্রহণ করে। জজবাড়ি এখন কলাকোপার প্রাণ। রাস্তার এক পাশে বাড়ি। অন্য পাশে দোকান, বাজার, চা—আড্ডা কত কী! তবে খুব একটা জমজমাট এখনো হয়ে ওঠেনি। জজবাড়িতে প্রচুর গাছগাছালির সমারোহ। গাছের ফাঁকে ঘুরে বেড়ায় চিত্রা হরিণ।
এ বাড়ির পাশের রাস্তাটি চলে গেছে আনসার ও ভিডিপির ক্যাম্পের দিকে। এখানে যে বাড়িতে ২৯ আনসার ব্যাটালিয়নের বসবাস, তা তেলিবাড়ি নামে খ্যাত। অনেকে একে বলে মঠবাড়ি। শোনা যায়, বাড়ির একদা মালিক বাবু লোকনাথ তেল বিক্রি করে ধনী হয়েছিলেন। তাই বাড়ির এমন নাম হয়েছে। এখানে তিন-চারটি বাড়ি আছে। ইছামতীর তীরে তেলিদের বিশাল দুটি মহল সত্যি অসাধারণ! তেলিবাড়ি থেকে সামনে ইছামতীর তীর ধরে একটু সামনে এগোলে যে ইমারতগুলো চোখে পড়বে, তার প্রথমটি পাইন্নাবাড়ি। এই বাড়ির তিন মালিকের অন্যতম মধু বাবু পান বিক্রি করে ধনী হওয়ার জন্যই বাড়িটির এমন নামকরণ।
কলাকোপা-বান্দুরায় ইছামতীর তীরে রোমান স্থাপত্যশৈলীর আরেক নিদর্শন রাধানাথ সাহার বাড়ি। বাড়িটির বয়স প্রায় ২০০ বছর। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই বাড়িতে লুটপাট চলে, বাড়িটিও ভাঙচুর হয়। বাড়ির প্রধান ফটক ধরে ভেতরে ঢুকলে সামনে পড়বে বিশাল উঠোন। মাঝে জলাধার, আর তুলসী মঞ্চ। পাশেই পুজোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান। বাড়ির মালিক রাধানাথ সাহা চাল ও সুপারির ব্যবসা করতেন। ভারতের মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত তার ব্যবসার পরিধি ছিল।
এবার রাধানাথ সাহার বাড়ি পেছনে ফেলে একটু সামনে এগিয়ে যাই। সেখানেই চোখে পড়ে খেলারামের সেই বিখ্যাত বিগ্রহ মন্দিরটি। পাশেই বিশাল পুকুর। প্রচলিত আছে, মাকে বাঁচাতে খেলারাম দাতা এই পুকুরে নেমেছিলেন। আর উঠে আসেননি। এলাকাবাসীর এখনো বিশ্বাস, খেলারাম একদিন ঠিকই ফিরে আসবেন, সঙ্গে নিয়ে আসবেন গঙ্গা নদীকে।
এবার বান্দুরায়
ফুলতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু সামনে এগোলেই নবাবগঞ্জের বান্দুরা গ্রাম। প্রথমেই চোখে পড়বে হলিক্রস স্কুল। আরেকটু সামনে এগোলে বিশাল মাঠ পেরিয়ে পাওয়া গেল জপমালা রানির গির্জা। ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত এই গির্জাটি গথিক শিল্পকর্মের অনন্য নিদর্শন। পুরো গির্জাটি হলুদ বর্ণের সুন্দর কারুকাজে ভরা। প্রার্থনা কক্ষ, সমাধিস্থলসহ সব দেখে মন ভরে যাবে। গির্জার সামনেই জপমালা দেবীর নামাঙ্কিত ফলক তাঁর স্মৃতি ধরে রেখেছে। ফেরার পথে সময় থাকলে তাঁতপল্লি ঘুরে আসতে পারেন। কলাকোপা-বান্দুরায় থাকার মতো ভালো হোটেল নেই। তাই সন্ধ্যার আগেই ঢাকার বাস ধরা ভালো। তবে বাড়ি ফেরার সময় বান্দুরার বাসুদেব সাহার মিষ্টান্ন ভান্ডার ঘুরে আসতে ভুল করবেন না।
কীভাবে যাবেন
কলাকোপা-বান্দুরায় দিনে এসে দিনেই ঢাকায় ফেরা যায়। এ জন্য সকালেই রওনা হওয়া দরকার। গুলিস্তান, বাবুবাজার, কেরানীগঞ্জ, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী থেকে সরাসরি বান্দুরার বাস সার্ভিস আছে। তবে দলবেঁধে মাইক্রোবাস নিয়ে গেলে দারুণ একটা পিকনিক করা যাবে।

মুন্সিগঞ্জ ভ্রমণ

রাজধানী থেকে মাত্র ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ঐতিহাসিক জনপদ মুন্সিগঞ্জ। এর উত্তরে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা, পূর্বে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলা, দক্ষিণে মাদারীপুর ও শরিয়তপুর জেলা এবং পশ্চিমে ঢাকা ও ফরিদপুর জেলা। পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী, ইছামতি ও শীতলক্ষা এ জেলার প্রধান নদী। এ জেলার বেশিরভাগ বেড়ানোর জায়গাই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাকেন্দ্রিক। কড়চার এবারের বেড়ানো একদিনে মুন্সিগঞ্জ ভ্রমণ
ইদ্রাকপুর দুর্গ
মুন্সীগঞ্জ শহরের ইদ্রাকপুরে অবস্থিত ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ইদ্রাকপুর দুর্গ। ইতিহাস থেকে জানা যায় মুঘল সুবাদার মীর জুমলা ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে পুরনো ইছামতি নদীর পশ্চিম তীরের ইদ্রাকপুরে এই দুর্গটি নির্মাণ করেন। নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ ও সোনাকান্দা দুর্গের চেয়ে এটি আয়তনে কিছুটা ছোট। সে সময় মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকা রক্ষা করার জন্য নির্মিত হয়েছিল এই দুর্গটি। সুরঙ্গ পথে ঢাকার লালবাগ দুর্গের সাথে এই দুর্গের সংযোগ ছিল বলে একটি জনশ্রুতি আছে। উঁচু প্রাচীর ঘেরা এই দুর্গের চারকোণে রয়েছে একটি করে গোলাকার বেস্টনী। দুর্গের ভেতর থেকে শত্রুর প্রতি গোলা নিক্ষেপ করার জন্য চারদিকের দেয়ালের গায়ে রয়েছে অসংখ্য ছিদ্র। বাংলাদেশে মুঘল স্থাপত্যের অনন্য নির্দশন হিসেবে ইদ্রাকপুর দুর্গটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষিত হয় ১৯০৯ সালে।
রামপাল দীঘি
জেলার রামপালে অবস্থিত। বিক্রমপুরের রাজধানী রামপালের রাজা বল্লাল সেন জনগণের পানীয় কষ্ট দূর করার জন্য এই বিশাল দীঘিটি খনন করেন। কিংবদন্তি আছে, বল্লাল সেনের মা প্রজাদের পানীয় জলের কষ্ট দূর করতে তাকে একটি দীঘি খনন করার আদেশ দেন। বল্লাল সেন মাকে আশ্বাস দেন, তিনি (মা) যতদূর হেঁটে যেতে পারবেন ততটুকু জায়গা নিয়ে দীঘি খনন করে দিবেন। পরের দিন সকালে তার মা দক্ষিণ দিকে হাঁটতে শুরু করেন। বল্লাল সেন দেখলেন তার মা অনেক দূর পর্যন্ত হেঁটে চলে গেছেন। তখন তার অসুস্থতার সংবাদ পাঠালে তিনি ফিরে আসেন। সেদিন বল্লাল সেনের মা যতদূর পর্যন্ত হেঁটে গিয়েছিলেন ততটুকু দীর্ঘ দীঘি খনন করেন বল্লাল সেন।
বল্লালবাড়ি
রামপাল দীঘির উত্তর পাশে অবস্থিত বল্লাল সেনের বাড়ি। এখানে ছিল বল্লাল সেনের রাজপ্রাসাদ ও একটি পরিখা। বর্তমানে পরিখার চিহ্ন থাকলেও রাজপ্রাসাদটি ধ্বংস হয়ে গেছে।
বাবা আদম শহীদ মসজিদ
জেলার রামপালের রেকাবি বাজার ইউনিয়নের কাজী কসবা গ্রামে অবস্থিত বাবা আদম শহীদ মসজিদ। এর কেন্দ্রীয় প্রবেশপথের উপরের একটি শিলালিপি থেকে জানা যায়, সুলতান ফতেহ শাহ’র শাসনামলে, ১৪৮৩ সালে মালিক কাফুর মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির বাইরের দিকের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে ১০.৩৫ মিটার ও ৩.৭৫ মিটার। এর দেয়াল প্রায় ২ মিটার পুরু। মসজিদের উপরে দুই সারিতে ছয়টি গম্বুজ আছে। মসজিদের পাশেই আছে বাবা আদমের সমাধি। জনশ্রুতি আছে, বল্লাল সেনের রাজত্বকালে বাবা আদম নামে একজন ব্যক্তি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে আসেন। বল্লাল সেনের নির্দেশে বাবা আদমকে হত্যা করা হলে তাকে এখানে সমাহিত করা হয়।
মীরকাদিম পুল
মুন্সিগঞ্জ শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে মীরকাদিম খালের ওপর নির্মিত মুঘল আমলের পুল। প্রায় ৫২.৪২ মিটার দৈর্ঘ্যের এ পুলটি বেশ কয়েকবার সংস্কারের ফলে এর পুরনো রূপ এখন আর নেই। চুন-সুরকিতে তৈরি এ পুলটির সঠিক নির্মাণকাল জানা যায়নি।
পণ্ডিতের ভিটা
সদর উপজেলার বজ্রজোগিনী ইউনিয়নের সোমপাড়ায় অবস্থিত শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্করের বসতভিটা। বর্তমানে এখানে থাই স্থাপত্য রীতিতে তৈরি একটি স্মৃতিসৌধ বর্তমান।
শ্যাম শিদ্ধির মঠ
জেলার শ্রীনগর উপজেলার শ্রীনগর বাজারের পশ্চিম দিকে শ্যামসিদ্ধি গ্রামে অবস্থিত এ মঠ। মঠটির দক্ষিণ দিকের প্রবেশপথের উপরের বাংলা শিলালিপি অনুযায়ী, ১৮৩৬ সালে জনৈক শম্ভুনাথ মজুমদার এটি নির্মাণ করেন। ইট নির্মিত বর্গাকোর এ মঠের দৈর্ঘ্য ৬ মিটার এবং উঁচু প্রায় ২০ মিটার।
সোনারং জোড়া মঠ
জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সোনারং গ্রামে অবস্থিত পাশাপাশি দুটি মঠ। এর বড়টি শিবের উদ্দেশ্যে এবং ছোটটি কালীর উদ্দেশ্যে নিবেদিত। শিব মন্দিরটি ১৮৪৩ সালে এবং কালী মন্দিরটি ১৮৮৬ সালে নির্মিত। জানা যায়, রূপচন্দ্র নামক এক হিন্দু বণিক এর নির্মাতা।
পদ্মা রিজর্ট
জেলার লৌহজংয়ে পদ্মার চরের মনোরম একটি জায়গায় নির্মিত পদ্মা রিজর্ট। এখানে আছে কাঠের তৈরি ষোলোটি কটেজ। পদ্মা নদীর সৌন্দর্য উপভোগের সঙ্গে সঙ্গে থাকা-খাওয়ারও সুব্যবস্থা আছে। এখানকার রেস্তোরাঁটির খাবার মানও ভালো। কটেজে অবস্থান না করতে চাইলে শুধু জায়গাটি বেড়িয়ে আসা যায়। পদ্মা রিজর্টের আগাম বুকিং দেয়া যাবে এই নম্বরে ০১৭১৩০৩৩০৪৯।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক ও জলপথে মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে আসা যায়। ঢাকার গুলিস্তান ও বঙ্গভবনের দক্ষিণ পাশ থেকে নয়ন পরিবহন, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট ছাড়াও বেশ কিছু বাস মুন্সিগঞ্জ যায়। ভাড়া ৩০-৪০ টাকা। এছাড়া ঢাকার সদরঘাট থেকে ছোট ছোট কিছু লঞ্চ, চাঁদপুরগামী সব বড় লঞ্চই মুন্সিগঞ্জ কাঠপট্টি স্টেশনে থামে। ভাড়া ১৫-২০ টাকা।
কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে দিনে দিনে মুন্সিগঞ্জ ভ্রমণ শেষ করে ফিরে আসা সম্ভব। তাছাড়া জেলাশহরে থাকার সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে। শহরের দু-একটি হোটেল হলো- হোটেল থ্রি স্টার (০১৭১৫৬৬৫৮২৯, ০১৭১৫১৭৭৭১৬) এবং হোটেল কমফোর্ট। এসব হোটেল ১৫০-৬০০ টাকায় থাকার ব্যবস্থা আছে। ভ্রমণে গেলে মুন্সিগঞ্জের জায়গাগুলো দেখে সবশেষে পদ্মা রিজর্টে (০১৭১৩০৩৩০৪৯) এসে থাকলে ভালো লাগবে।

India Rajasthan Tour

The state of Rajasthan emerged after Partition from a mosaic of twenty-two feudal kingdoms, known in the British era as Rajputana, “Land of Kings”. Running northeast from Mount Abu, near the border with Gujarat, to within a stone’s throw of the ruins of ancient Delhi, its backbone is formed by the bare brown hills of the Aravalli Range, which divide the fertile Dhundar basin from the shifting sands of the mighty Thar Desert, one of the driest places on earth.
Rajasthan’s extravagant palaces, forts and finely carved temples comprise one of the country’s richest crops of architectural monuments. But these exotic buildings are not the only legacy of the region’s prosperous and militaristic history. Rajasthan’s strong adherence to tradition is precisely what makes it a compelling place to travel around. Swaggering moustaches, heavy silver anklets, bulky red, yellow or orange turbans, pleated veils and mirror-inlaid saris may be part of the complex language of caste, but to most outsiders they epitomize India at its most exotic.

Colour also distinguishes Rajasthan’s most important tourist cities. Jaipur, the vibrant state capital, is known as the “Pink City” thanks to the reddish paint applied to its ornate facades and palaces. Jodhpur, the “Blue City”, is centred on a labyrinthine old walled town, whose sky-blue mass of cubic houses is overlooked by India’s most imposing hilltop fort. Further west, the magical desert city of Jaisalmer, built from local sandstone, is termed the “Golden City”. In the far south of the state, Udaipur hasn’t gained a colour tag yet, but it could be called the “White City”: coated in decaying limewash, its waterside palaces and havelis are framed by a distant vista of sawtooth hills.
The route stringing together these four cities has become one of the most heavily trodden tourist trails in India. But it’s easy to escape into more remote areas. Northwest of Jaipur, the desert region of is dotted with atmospheric market towns and innumerable richly painted havelis, while the desert city of Bikaner is also well worth a stopover for its fine fort, havelis and the unique “rat temple” at nearby Deshnok. The same is true of Bundi, in the far south of the state, with its magnificent, muralled fort and blue-washed old town, as well as the superbly prominent fort at Chittaurgarh nearby, not to mention the engaging hill station and remarkable Jain temples of Mount Abu.

Another attraction is Rajasthan’s wonderful wildlife sanctuaries. Of these, the tiger sanctuary at Ranthambore is deservedly the most popular, while Keoladeo National Park, on the eastern border of Rajasthan near Agra, is unmatched in South Asia for its incredible avian population, offering a welcome respite from the frenetic cities that inevitably dominate most visitors’ itineraries.

Brief history

The turbulent history of Rajasthan only really begins in the sixth and seventh centuries AD, with the emergence of warrior clans such as the Sisodias, Chauhans, Kachchwahas and Rathores – the Rajputs (“sons of Kings”) Never exceeding eight percent of the population, they were to rule the separate states of Rajputana for centuries. Their code of honour set them apart from the rest of society – as did the myth that they descended from the sun and moon.
The Rajput codes of chivalry that lay behind endless clashes between clans and family feuds found their most savage expression in battles with Muslims. Muhammad of Ghor was the first to march his troops through Rajasthan, eventually gaining a foothold that enabled him to establish the Sultanate in Delhi. During the 350 years that followed, much of central, eastern and western India came under the control of the sultans, but, despite all their efforts, Rajput resistance prevented them from ever taking over Rajputana.

Ghor’s successors were pushed out of Delhi in 1483 by the Mughal Babur, whose grandson Akbar came to power in 1556. Aware of the futility of using force against the Rajputs, Akbar chose instead to negotiate in friendship, and married Rani Jodha Bai, a princess from the Kachchwaha family of Amber. As a result, Rajputs entered the Mughal courts, and the influence of Mughal ideas on art and architecture remains evident in palaces, mosques, pleasure gardens and temples throughout the state.
When the Mughal empire began to decline after the accession of Aurangzeb in 1658, so too did the power of the Rajputs. Aurangzeb sided with a new force, the Marathas, who plundered Rajput lands and extorted huge sums of protection money. The Rajputs eventually turned for help to the Marathas’ chief rivals, the British, and signed formal treaties as to mutual allies and enemies. Despite growing British power, the Rajputs were never denied their royal status, and relations remained largely amicable.
The nationwide clamour for Independence in the years up to 1947 eventually proved stronger in Rajasthan than Rajput loyalty; when British rule ended, the Rajputs were left out on a limb. With persuasion from the new Indian government they agreed one by one to join the Indian Union, and in 1949 the 22 states of Rajputana finally merged to form the state of Rajasthan.
Modern Rajasthan remains among the poorest and most staunchly traditional regions of India, although attempts to raise educational and living standards are gradually bearing fruit. Since 1991, Rajasthan has tripled its literacy rate, a feat unmatched by any other state, while several universities have been established and new industries have benefited from an electricity supply that now reaches most villages. Irrigation schemes have also improved crop production in this arid region, although the severe threat of drought remains an acute problem, and the greatest single threat to Rajasthan’s future prosperity.

Sundarbans Forest Tour

Sundarbans is the largest mangrove forest in the world. The total area of the Sundarbans reserved forest including the West Bengal portion, comprises of 10,000 sq. km., of which Bangladesh portion is approximately 6000 sq.km. inclusive of new emerging islands.This is now one of the famous world heritage declared by UNESCO and the homeland of world famous Royal Bengal Tiger. About 30,000 beautiful spotted deer live in sundarban. There are over 120 different species of fish in Sundarban. In Sundarban, not less than 270 variety of birds are found and more than 50 species of reptiles have found in Sundarban and Eight species of amphibians are seen in Sundarban.
Day-1: Leave Dhaka in the evening at 22:30 by AC Night Coach for Khulna.
Day-2: Arrival at Khulna in the in the early morning, and will be transferred to our Ship and immediately the boat will start cruising towards the Sundarbans Forest. We’ll arrive at Kotka around 1600hrs. In the late afternoon hiking in the Kotka forest area to see wild life and forest. Back to the boat in the evening and will overnight at Kotka on the boat.

Day-3: Early in the morning we shall offer trip through small creeks and canals by country boat to see the wildlife and feel the forest from very close. After breakfast Jungle walk, etc will be offered. At around 12:00hrs start cruising towards Kochikhali wildlife sanctuary, upon arrival Jungle walk near forest office. Bar – B – Q dinner on boat & overnight on the boat at Kochikhali.
Day-4: Early in the morning we shall offer trip through small creeks and canals by country boat. Around 12:00hrs leave Kochikhali for Mongla. Arrive at Khulna in the evening. After dinner drive back to Dhaka by a/c coach. (Overnight drive)
Day-5: Upon arrival at Dhaka in the morning, end the tour.

পাহাড় ও হ্রদ একসঙ্গে দেখ যাবে

বাংলাদেশে পাহাড় ও হ্রদ একসঙ্গে দেখ যাবে—এ রকম জায়গা খুব কম, এর মধ্যে রাঙামাটি একটি। আগে রাঙামটি ঘুরে দেখলেও পাহাড়ি গ্রাম বা আদিবাসীদের জীবনযাত্রার পরিচয় পাইনি। আমরা কয়েকজন বন্ধু লোকালয় থেকে একটু দূরে এমন কোনো জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনা করলাম, কোথায় যাব ভাবছি। এ সময় রাঙামাটির বিলাইছড়ি থেকে এক বন্ধুর দাওয়াত পেয়ে হাতে যেন চাঁদ পেলাম।
আমরা সাত বন্ধু- দুই জোড়া দম্পতি ও তিনজন ব্যাচেলর বিলাইছড়ি রওনা দিলাম। রাতে সরাসরি কাপ্তাইয়ের বাসে রওনা দিয়ে সকাল আটটার মধ্যে সেখানে পৌঁছে গেলাম। খবর নিয়ে জানা গেল, সাড়ে নয়টায় বিলাইছড়ির ট্রলার যাত্রা শুরু করবে, এরপর প্রতি ঘণ্টায় ট্রলার আছে। আমরা প্রথম ট্রলারেই রওনা দিয়ে ১১টার দিকে পৌঁছে গেলাম বিলাইছড়ি।
এখানে রাস্তা তেমন নেই। এক পাড়া থেকে আরেক পাড়া ঘুরতে গেলেও নৌকা লাগে, তবে এখন কয়েকটি সেতু হয়েছে। আমরা নৌকা নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের গাইড হলো স্থানীয় একজন চাকমা। জানা গেল, বিলাইছড়ি উপজেলার নাম হয়েছে একই নামের ঝরনা থেকে। ছড়ি অর্থ ঝরনা আর বিলাই মানে স্থানীয় ভাষায় বাঘ। অনেক আগে প্রথম লোকবসতি শুরুর সময় এখানে ছড়ি থেকে পানি আনতে গিয়ে এক পাহাড়ি বধূ বাঘের সামনে পড়ে যায়, তখন থেকে ওই ঝরনার নাম হয়ে যায় বিলাইছড়ি এবং সংলগ্ন লোকালয় একই নামে পরিচিত হয়ে যায়। ‘তবে এখন সেই রামও নাই এবং অযোধ্যাও নাই’-এর মতো এখানে কোনো বাঘ নেই। তবে এখনো ওই ঝরনা বা ছড়ি দেখা যায়।
কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে পাহাড়, নদী, জঙ্গল ও হ্রদ নিয়ে সুন্দর একটি উপজেলা বিলাইছড়ি। অপ্রতুল যোগাযোগব্যবস্থা, তেমন প্রচার না হওয়ায় এই এলাকা এখনো লোকজনের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠেনি। গাড়ির হর্ন, কোলাহল ও নাগরিক জীবনের অপ্রিয় কিন্তু এড়ানো সম্ভব নয়,—এ ধরনের সব জিনিস এখানে এসে ভুলে থাকা যায়। অলস ঘুঘুডাকা দুপুর এখনো পাওয়া যায়। এখানে দেখার মতো প্যাগোডা, কমলা বাগান, পাহাড়, নদী, হ্রদ আছে। তবে এখানকার সহজ-সরল আদিবাসীদের সঙ্গে না ঘুরলে বা কথা না বললে ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যাবে।
বিলাইছড়িতে গেলে বাজার অবশ্যই ঘুরবেন, আদিবাসীদের নানা রকম পাহাড়ি বনজ ও অপ্রচলিত খাবার, যেমন—আদা ফুল, হলুদ ফুল, বাঁশের খোড়ল, শামুকসহ নানা রকম পাহাড়ি ঢেঁকিশাক দেখতে পাবেন। তবে সবজি দেখতে সুন্দর হলেই যে খেতে ভালো হবে, এই ধারণা নিয়ে বাজারে গেলে এবং আগে এ ধরনের খাবার না খেলে কিঞ্চিত অসুুবিধায় পড়তে হতে পারে। আমাদের সহযাত্রী মেয়েরা এই সুন্দর ফুল দেখেই কিনে ফেলল এবং খাওয়ার তোড়জোড় শুরু করে দিল। কিন্তু একবার মুখে দেওয়ার পর মনে হলো, ফুল হাতে এবং চুলেই ভালো, রান্নাঘরে বা খাবার প্লেটে নয়।
বিলাইছড়িতে খাবারের খুব ভালো ব্যবস্থা নেই। তাই নিজেরা বাজার করে হোটেল থেকে রান্না করিয়ে নেওয়াই ভালো। কাপ্তাই লেকের মাছ না খেলে ভ্রমণের মজা অন্তত বারোআনাই মাটি। আমরা মাছ ধরার চেষ্টাও চালিয়েছি ধার করা বড়শি দিয়ে, কিন্তু ভাগ্য বিরূপ। কাঁকড়াও পেলাম না, শেষ পর্যন্ত বাজারই ভরসা।
বিলাইছড়িতে গেলে প্রথমেই ঘোরা উচিত ভিন্ন উপজাতিদের পাড়াগুলো। প্রতিটি উপজাতির আছে আলাদা ঐতিহ্য, আলাদা কাহিনি। এ ছাড়া কমলা বাগান, কাজুবাদামের বাগান ঘুরে দেখা যায়। তবে কাপ্তাই হূদ ও নদী অবশ্যই সময় নিয়ে দেখা উচিত। এ জন্য নৌকা নিয়ে ভ্রমণ করা যায়।

এ ছাড়া আশপাশের বেশ কিছু লোকালয় আছে, যেগুলো দিনেই ঘুরে আসা যায়। কিছুটা দূরে ফারুয়া বাজার আছে, পুরো দিন হাতে থাকলে সকালে বেরিয়ে বিকেলে চলে আসা যায়। এ ছাড়া আরও কিছু নাম না জানা পাহাড় আছে। বিলাইছড়ির পাহাড় কাপ্তাই বাঁধের অংশ হিসেবে কাজ করে। তাই মূল রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় এক পাশে গভীর গিরিখাদ, অপর পাশে পানিভরা হ্রদ চোখে পড়ে। এটাও দেখা উচিত হ্রদের গভীরতা বোঝার জন্য।
এই মৌসুমে যাওয়ার আগে অবশ্যই রোদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য টুপি নিয়ে যেতে হবে। সাঁতার কাটার ইচ্ছা থাকলে কাপড় নিতে হবে। আর টর্চলাইট নিতে ভুলবেন না। কারণ, বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার মধ্যেই থাকতে হবে।
কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন
বিলাইছড়ি যাওয়ার আগে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে যাওয়া উচিত। বিলাইছড়ি বাজারে কাঠের দোতলা হোটেল আছে, যদিও থাকার জন্য খুব একটা ভালো বলা যাবে না। এ ছাড়া উপজেলা অফিসের একটি বাংলো আছে, যেখানে আগে থেকে অনুমতি নিয়ে গেলে ভালো হয়। হোটেলের ভাড়া খুবই কম।
ঢাকা থেকে বিলাইছড়িতে যেতে হলে সরাসরি বাসে কাপ্তাই গিয়ে, সেখান থেকে ট্রলারে বিলাইছড়ি যাওয়া যায়। দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। আবার সরাসরি রাঙামাটি বাসে গিয়ে, সেখান থেকে ট্রলারে দুই-আড়াই ঘণ্টা ভ্রমণ করে বিলাইছড়ি পৌঁছা যায়। ট্রলার ভাড়া ৫০ থেকে ১০০ টাকা প্রতিজনের জন্য। আর পুরো ট্রলার ভাড়া নিতে মোটামুটি ৫০০-৬০০ টাকা লাগবে। ঢাকা থেকে সরাসরি রাঙামাটি যায় এমন বাস আছে—এস আলম, ডলফিন, শান্তিসহ বেশ কিছু পরিবহন সংস্থার।