সবুজ পাহাড়, টলটলে হ্রদের মাঝে অবকাশকেন্দ্র এমন একটা সময় ছিল, যখন
‘শেরপুর’ বলতে সবাই জানতে চাইতেন, কোন শেরপুর? ময়মনসিংহ, বগুড়া না সিলেটের
শেরপুর? কিন্তু এখন সেই দ্বিধার জায়গা অনেকটা পরিষ্কার। গজনী অবকাশকেন্দ্র
শেরপুরের পরিচিতি বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক।
১৯৯৩ সালে শেরপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে গড়ে ওঠে এটি।
শেরপুর জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলের প্রধান ও আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে এটি।
গজনী এলাকাটি ব্রিটিশ আমল থেকেই পিকনিক স্পট বা বনভোজনের জায়গা হিসেবে পরিচিত। মনোরম পাহাড়ি শোভামণ্ডিত গজনী এলাকায় একটি পুরোনো বটগাছের পূর্বদিকে আনুমানিক ২০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের টিলায় নির্মাণ করা হয়েছে তিনতলা অবকাশভবন। সেই সঙ্গে এলাকার প্রাচীন বটগাছের বিশাল গোলচত্বরটি পাকা করা হয়েছে। ছটির দিনে বিশাল বটগাছের ছায়ায় চলে আড্ডা।
গারো উপজাতি-অধ্যুষিত গারো পাহাড়ের পাদদেশে স্বচ্ছ পানির হ্রদ ও দিগন্তছোঁয়া সবুজ বনানীই এই এলাকার বৈশিষ্ট্য। এর মাঝে গড়ে ওঠা গজনী অবকাশকেন্দ্রে রয়েছে ছয় কক্ষের তিনতলা রেস্টহাউস। সমতল ভূমি থেকে অবকাশভবনে ওঠানামা করার জন্য পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় আঁকাবাঁকা ‘পদ্মসিঁড়ি’। এখানে রয়েছে হ্রদের পানির ওপর সুদৃশ্য দ্বিতল ‘জিহান অবসরকেন্দ্র’, লেকের মাঝে কৃত্রিম দ্বীপ ও দ্বীপের ওপর ‘লেকভিউ পেন্টাগন’।
গারো পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য আছে আকাশচুম্বী ‘সাইট ভিউ টাওয়ার’। কৃত্রিম হ্রদে নৌবিহারের জন্য আনা হয়েছে হয়েছে ‘প্যাডেল বোট’। দেশি ‘ময়ূরপঙ্খি নাও’ও আছে। আরও উপভোগ করবেন দোদুল্যমান ব্রিজ ও সুড়ঙ্গ পথ। শিশুদের বিনোদনের জন্য নির্মিত হয়েছে চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, বন্য হাতির ভাস্কর্য ‘মিথিলা’ আর মৎস্যকন্যা ‘কুমারী’। কৃত্রিম জলপ্রপাতও তৈরি হয়েছে এখানে।
গজনী অবকাশকেন্দ্র থেকে দুই কিলোমিটার দূরে সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্য অবস্থিত। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ এলাকা হিসেবেও এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। গজনী অবকাশকেন্দ্রে নির্মিত হয়েছে ‘স্বাধীনতাযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ’।
প্রায় প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাসফর উপলক্ষে এবং শৌখিন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা, সংগঠন, ক্লাব, কর্মজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। চলতি শীত মৌসুম থেকে শুরু করে বসন্তের শেষলগ্নেও গজনী অবকাশকেন্দ্র পিকনিক দলের উৎসবে মুখরিত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে ভ্রমণবিলাসী মানুষের পদচারণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এই গজনী অবকাশকেন্দ্র।
কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে বা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে এক দিনের জন্য গজনী অবকাশকেন্দ্রে বেড়াতে এলে থাকার প্রয়োজন পড়ে না। তবে কেউ যদি দর্শনীয় জায়গাগুলো একাধিকবার দেখতে চান, তবে শেরপুর জেলা শহরে হোটেল সম্পদ প্লাজা, কাকলি গেস্টহাউস, হোটেল বাগানবাড়ি অথবা সার্কিট হাউসে রাত যাপন করতে পারবেন; ভাড়া লাগবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। অবকাশকেন্দ্রের রেস্টহাউসে রাত যাপনের অনুমতি নেই।
কীভাবে যাবেন
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ফিডার রোড নির্মিত হওয়ায় শেরপুর জেলার যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি সড়কপথে সাড়ে চার-পাঁচ ঘণ্টায় গজনীতে পৌঁছানো যায়। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ড্রিমল্যান্ড স্পেশাল সার্ভিসে ঢাকা থেকে শেরপুর আসবেন; ভাড়া ২০০ টাকা। এরপর এখান থেকে বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা রেন্ট-এ-কারে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর হয়ে গজনী অবকাশকেন্দ্রে যেতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় নিজস্ব গাড়ি নিয়ে এলে। উল্লেখ্য, গজনী অবকাশকেন্দ্রের ছয় কক্ষবিশিষ্ট রেস্টহাউসের প্রতিটি কক্ষের ভাড়া ৫০০ টাকা।
১৯৯৩ সালে শেরপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে গড়ে ওঠে এটি।
শেরপুর জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলের প্রধান ও আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে এটি।
গজনী এলাকাটি ব্রিটিশ আমল থেকেই পিকনিক স্পট বা বনভোজনের জায়গা হিসেবে পরিচিত। মনোরম পাহাড়ি শোভামণ্ডিত গজনী এলাকায় একটি পুরোনো বটগাছের পূর্বদিকে আনুমানিক ২০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের টিলায় নির্মাণ করা হয়েছে তিনতলা অবকাশভবন। সেই সঙ্গে এলাকার প্রাচীন বটগাছের বিশাল গোলচত্বরটি পাকা করা হয়েছে। ছটির দিনে বিশাল বটগাছের ছায়ায় চলে আড্ডা।
গারো উপজাতি-অধ্যুষিত গারো পাহাড়ের পাদদেশে স্বচ্ছ পানির হ্রদ ও দিগন্তছোঁয়া সবুজ বনানীই এই এলাকার বৈশিষ্ট্য। এর মাঝে গড়ে ওঠা গজনী অবকাশকেন্দ্রে রয়েছে ছয় কক্ষের তিনতলা রেস্টহাউস। সমতল ভূমি থেকে অবকাশভবনে ওঠানামা করার জন্য পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় আঁকাবাঁকা ‘পদ্মসিঁড়ি’। এখানে রয়েছে হ্রদের পানির ওপর সুদৃশ্য দ্বিতল ‘জিহান অবসরকেন্দ্র’, লেকের মাঝে কৃত্রিম দ্বীপ ও দ্বীপের ওপর ‘লেকভিউ পেন্টাগন’।
গারো পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য আছে আকাশচুম্বী ‘সাইট ভিউ টাওয়ার’। কৃত্রিম হ্রদে নৌবিহারের জন্য আনা হয়েছে হয়েছে ‘প্যাডেল বোট’। দেশি ‘ময়ূরপঙ্খি নাও’ও আছে। আরও উপভোগ করবেন দোদুল্যমান ব্রিজ ও সুড়ঙ্গ পথ। শিশুদের বিনোদনের জন্য নির্মিত হয়েছে চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, বন্য হাতির ভাস্কর্য ‘মিথিলা’ আর মৎস্যকন্যা ‘কুমারী’। কৃত্রিম জলপ্রপাতও তৈরি হয়েছে এখানে।
গজনী অবকাশকেন্দ্র থেকে দুই কিলোমিটার দূরে সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্য অবস্থিত। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ এলাকা হিসেবেও এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। গজনী অবকাশকেন্দ্রে নির্মিত হয়েছে ‘স্বাধীনতাযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ’।
প্রায় প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাসফর উপলক্ষে এবং শৌখিন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা, সংগঠন, ক্লাব, কর্মজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। চলতি শীত মৌসুম থেকে শুরু করে বসন্তের শেষলগ্নেও গজনী অবকাশকেন্দ্র পিকনিক দলের উৎসবে মুখরিত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে ভ্রমণবিলাসী মানুষের পদচারণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এই গজনী অবকাশকেন্দ্র।
কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে বা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে এক দিনের জন্য গজনী অবকাশকেন্দ্রে বেড়াতে এলে থাকার প্রয়োজন পড়ে না। তবে কেউ যদি দর্শনীয় জায়গাগুলো একাধিকবার দেখতে চান, তবে শেরপুর জেলা শহরে হোটেল সম্পদ প্লাজা, কাকলি গেস্টহাউস, হোটেল বাগানবাড়ি অথবা সার্কিট হাউসে রাত যাপন করতে পারবেন; ভাড়া লাগবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। অবকাশকেন্দ্রের রেস্টহাউসে রাত যাপনের অনুমতি নেই।
কীভাবে যাবেন
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ফিডার রোড নির্মিত হওয়ায় শেরপুর জেলার যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি সড়কপথে সাড়ে চার-পাঁচ ঘণ্টায় গজনীতে পৌঁছানো যায়। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ড্রিমল্যান্ড স্পেশাল সার্ভিসে ঢাকা থেকে শেরপুর আসবেন; ভাড়া ২০০ টাকা। এরপর এখান থেকে বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা রেন্ট-এ-কারে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর হয়ে গজনী অবকাশকেন্দ্রে যেতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় নিজস্ব গাড়ি নিয়ে এলে। উল্লেখ্য, গজনী অবকাশকেন্দ্রের ছয় কক্ষবিশিষ্ট রেস্টহাউসের প্রতিটি কক্ষের ভাড়া ৫০০ টাকা।
No comments:
Post a Comment