মহানন্দার কোলে সুনসান তেঁতুলিয়া। নগর ছাড়িয়ে অনেক দূরে আছে এক নীরব
জনপদ। সবুজ মাঠে ঘুরে বেড়ায় বিচিত্র সব পাখি। শান্ত নদীটাও ঢেউ তোলে না।
মানুষগুলোর মাঝে নেই হইচই।
রাতের আঁধারে মহানন্দার কোলে চা-বাগান আর সবুজ ধানখেত নিয়ে তেঁতুলিয়া। খুবই স্াধারণ সুনসান জনপদ, যেখানে নীরবতার আমেজটা পাওয়া যায়। নিরিবিলি কয়েকটা দিন কাটাতে চাইলে চলে আসতে পারেন এখানে।
এবার তেঁতুলিয়া এলাম এক পাখির খোঁজে, পাখি বাঁচাতে আবারও এখানে আসা। জায়গাটির নাম কাজিপাড়া। চা-বাগান, আখখেত (স্থানীয় লোকজনের ভাষায় কুশন বন), ধানখেত, বাঁশ ও গুল্মের কয়েকটি ছড়ানো-ছিটানো জঙ্গল আর মাঝারি এক মাঠ নিয়ে কাজিপাড়া। এখানেই বসবাস করে বাংলাদেশের বিপন্ন এক পাখি কালা তিতির। স্থানীয় মানুষের কাছে অবশ্য পাখিটি শেখ ফরিদ ও বনমুরগি নামেই পরিচিত। তাদের মতে, এই পাখি একসময় সংখ্যায় ছিল অনেক। কিন্তু বসতি ধ্বংস ও স্থানীয় শিকারিদের কারণে প্রায় হারিয়েই গেছে এই পাখি। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের তেঁতুলিয়াই এই পাখির শেষ প্রাকৃতিক আবাসস্থল। এখানে আজ থেকে ৩০ বছর আগে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ধরা পড়েছিল বলে জানালেন স্থানীয় এক প্রবীণ।
পাখিটি দেখার সঠিক সময় হলো খুব সকাল আর সন্ধ্যা। কেন যেন পাখিটি মানুষকে খুব ভয় পায়। তাই কোনো রকম যদি মানুষের উপস্থিতি টের পায়, নিমেষেই পালিয়ে যায় ঝোপের আড়ালে।
তেঁতুলিয়ায় পৌঁছে রাত পার করি মহানন্দাপাড়ের ডাকবাংলোতে। দূরে ল্যাম্পের আলো, নদীর বুকে যেন কসমিক নীরবতা। তা ভেঙে যায় খেঁকশিয়ালের ডাকে।
সেদিন রাতের আরেকটি মজার অভিজ্ঞতা হলো বুনো খরগোশের দেখা পাওয়া। এত ভালো করে ধূসর রঙের বুনো খরগোশ দেখার সুযোগ জীবনে এর আগে কখনোই হয়নি।
এ সময় ফজরের আজান কানে আসে। বেরিয়ে পড়ি কাজিপাড়ার পথে। চারদিকে তখন কুয়াশা। শিশিরে ভেজা পথ। প্রথমেই দেখা মেলে পশ্চিমা হলদে খঞ্জনের সঙ্গে। তারপর নীলকণ্ঠ বা বাংলা নীলকান্ত, তিলা ঘুঘু, দাগি ছাতারে, বাংলা কুবো, ইউরেশিও কণ্ঠীঘুঘুর সঙ্গে। কোথায় শেখ ফরিদ ওরফে কালা তিতির? বেলা বাড়ে। ছয়টি হলদে গাল টিটি পাখি বসে খোলা মাঠে। তাদের পিছু পিছু ধানিতুলিকা, মেটেচাঁদি চড়ুইভরত, বন ছাতারে, খয়রাগলা নাকুটি। দুপুর গড়িয়ে আসে। দেখা নেই সেই পাখির। এবার চলে যাই মহানন্দাপাড়ে, যেখানে সকাল থেকে পাথর তুলছে অনেক মানুষ। বিকেল পাঁচটার পর আবার ফিরে আসি কাজিপাড়ার আখখেতের কাছে। এবার নামে বৃষ্টি। পুরোপুরি কাকভেজা হয়ে বসে থাকি আখখেতের ভেতর।
মাগরিবের আজানের ঠিক আগে চা-বাগানে শেখ ফরিদ ডেকে ওঠে। তখন মাঠে আলো নেই। পরদিন সকালে আবার আসি। তার ডাক শুনি। সে কিন্তু বের হলোই না ঝোপ থেকে।
বিকেলে আবার তার সন্ধানে। আবার বৃষ্টি। এবার নজরে পড়ল এক জোড়া কালা তিতির গুটি গুটি পায়ে এগোচ্ছে আখখেতের দিকে। যত কাছে আসি, পাখি দুটি ততই দূরে যায়। খুব দ্রুত পা বাড়িয়ে কয়েকটা ছবি নিই। কিন্তু মেঘলা আকাশ, আর বৃষ্টির জন্য ভালো ছবি হলো না। ততক্ষণে পাখিটি লুকিয়ে পড়ে। আবার ঝুমবৃষ্টি। কাকভেজা হয়ে ফেরার পথ ধরি।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার কল্যাণপুর, আসাদগেট, গাবতলী থেকে একাধিক পরিবহন (নাবিল, হানিফ) পঞ্চগড় যায়। যেতে সময় লাগবে প্রায় ১২-১৩ ঘণ্টা। পঞ্চগড় থেকে লোকাল বাসে তেঁতুলিয়া। সম্প্রতি কয়েকটি হোটেল তৈরি হয়েছে সেখানে। চাইলে সরকারি বাংলোতে থাকতে পারেন। এর জন্য আগেই বুকিং দিতে হবে।
রাতের আঁধারে মহানন্দার কোলে চা-বাগান আর সবুজ ধানখেত নিয়ে তেঁতুলিয়া। খুবই স্াধারণ সুনসান জনপদ, যেখানে নীরবতার আমেজটা পাওয়া যায়। নিরিবিলি কয়েকটা দিন কাটাতে চাইলে চলে আসতে পারেন এখানে।
এবার তেঁতুলিয়া এলাম এক পাখির খোঁজে, পাখি বাঁচাতে আবারও এখানে আসা। জায়গাটির নাম কাজিপাড়া। চা-বাগান, আখখেত (স্থানীয় লোকজনের ভাষায় কুশন বন), ধানখেত, বাঁশ ও গুল্মের কয়েকটি ছড়ানো-ছিটানো জঙ্গল আর মাঝারি এক মাঠ নিয়ে কাজিপাড়া। এখানেই বসবাস করে বাংলাদেশের বিপন্ন এক পাখি কালা তিতির। স্থানীয় মানুষের কাছে অবশ্য পাখিটি শেখ ফরিদ ও বনমুরগি নামেই পরিচিত। তাদের মতে, এই পাখি একসময় সংখ্যায় ছিল অনেক। কিন্তু বসতি ধ্বংস ও স্থানীয় শিকারিদের কারণে প্রায় হারিয়েই গেছে এই পাখি। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের তেঁতুলিয়াই এই পাখির শেষ প্রাকৃতিক আবাসস্থল। এখানে আজ থেকে ৩০ বছর আগে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ধরা পড়েছিল বলে জানালেন স্থানীয় এক প্রবীণ।
পাখিটি দেখার সঠিক সময় হলো খুব সকাল আর সন্ধ্যা। কেন যেন পাখিটি মানুষকে খুব ভয় পায়। তাই কোনো রকম যদি মানুষের উপস্থিতি টের পায়, নিমেষেই পালিয়ে যায় ঝোপের আড়ালে।
তেঁতুলিয়ায় পৌঁছে রাত পার করি মহানন্দাপাড়ের ডাকবাংলোতে। দূরে ল্যাম্পের আলো, নদীর বুকে যেন কসমিক নীরবতা। তা ভেঙে যায় খেঁকশিয়ালের ডাকে।
সেদিন রাতের আরেকটি মজার অভিজ্ঞতা হলো বুনো খরগোশের দেখা পাওয়া। এত ভালো করে ধূসর রঙের বুনো খরগোশ দেখার সুযোগ জীবনে এর আগে কখনোই হয়নি।
এ সময় ফজরের আজান কানে আসে। বেরিয়ে পড়ি কাজিপাড়ার পথে। চারদিকে তখন কুয়াশা। শিশিরে ভেজা পথ। প্রথমেই দেখা মেলে পশ্চিমা হলদে খঞ্জনের সঙ্গে। তারপর নীলকণ্ঠ বা বাংলা নীলকান্ত, তিলা ঘুঘু, দাগি ছাতারে, বাংলা কুবো, ইউরেশিও কণ্ঠীঘুঘুর সঙ্গে। কোথায় শেখ ফরিদ ওরফে কালা তিতির? বেলা বাড়ে। ছয়টি হলদে গাল টিটি পাখি বসে খোলা মাঠে। তাদের পিছু পিছু ধানিতুলিকা, মেটেচাঁদি চড়ুইভরত, বন ছাতারে, খয়রাগলা নাকুটি। দুপুর গড়িয়ে আসে। দেখা নেই সেই পাখির। এবার চলে যাই মহানন্দাপাড়ে, যেখানে সকাল থেকে পাথর তুলছে অনেক মানুষ। বিকেল পাঁচটার পর আবার ফিরে আসি কাজিপাড়ার আখখেতের কাছে। এবার নামে বৃষ্টি। পুরোপুরি কাকভেজা হয়ে বসে থাকি আখখেতের ভেতর।
মাগরিবের আজানের ঠিক আগে চা-বাগানে শেখ ফরিদ ডেকে ওঠে। তখন মাঠে আলো নেই। পরদিন সকালে আবার আসি। তার ডাক শুনি। সে কিন্তু বের হলোই না ঝোপ থেকে।
বিকেলে আবার তার সন্ধানে। আবার বৃষ্টি। এবার নজরে পড়ল এক জোড়া কালা তিতির গুটি গুটি পায়ে এগোচ্ছে আখখেতের দিকে। যত কাছে আসি, পাখি দুটি ততই দূরে যায়। খুব দ্রুত পা বাড়িয়ে কয়েকটা ছবি নিই। কিন্তু মেঘলা আকাশ, আর বৃষ্টির জন্য ভালো ছবি হলো না। ততক্ষণে পাখিটি লুকিয়ে পড়ে। আবার ঝুমবৃষ্টি। কাকভেজা হয়ে ফেরার পথ ধরি।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার কল্যাণপুর, আসাদগেট, গাবতলী থেকে একাধিক পরিবহন (নাবিল, হানিফ) পঞ্চগড় যায়। যেতে সময় লাগবে প্রায় ১২-১৩ ঘণ্টা। পঞ্চগড় থেকে লোকাল বাসে তেঁতুলিয়া। সম্প্রতি কয়েকটি হোটেল তৈরি হয়েছে সেখানে। চাইলে সরকারি বাংলোতে থাকতে পারেন। এর জন্য আগেই বুকিং দিতে হবে।
No comments:
Post a Comment